ক্রিয়াপদ কাকে বলে: যে পদ দ্বারা কোনো কিছু করা বা কোনো কাজ করা বোঝায়, তাকে ক্রিয়াপদ বলে। যেমন :
- বাবা এসেছেন।
- ঘড়িতে দশটা বাজে।
- আমি অঙ্ক করছি।
ক্রিয়াপদ নানা রকম হয় :
১. সমাপিকা ক্রিয়া কাকে বলে : যে ক্রিয়া দ্বারা বাক্যের অর্থ সম্পূর্ণ প্রকাশিত হয়, তাকে সমাপিকা ক্রিয়া বলে। যেমন : সেতু স্কুলে যায়। বিথু গান গায় ৷
২. অসমাপিকা ক্রিয়া কাকে বলে : যে ক্রিয়া দ্বারা বাক্যের অর্থ সম্পূর্ণ হয় না, তাকে অসমাপিকা ক্রিয়া বলে।
যেমন :আমি বাড়ি গিয়ে…. সে বই নিয়ে…….
এখানে ‘গিয়ে’, ‘নিয়ে’ ক্রিয়ার দ্বারা কথা শেষ হয় নি। বাক্যের অর্থ অসম্পূর্ণ রয়েছে। বাক্যের অর্থ সম্পূর্ণ করার জন্য আরও ক্রিয়া চাই। যেমন :
- আমি বাড়ি গিয়ে খাব।
- সে বই নিয়ে পড়তে বসেছে।
সুতরাং, ‘গিয়ে’, ‘নিয়ে’ হচ্ছে অসমাপিকা ক্রিয়া। আর ‘খাব’, ‘বসেছে’ এগুলো সমাপিকা ক্রিয়া ৷
সকর্মক ক্রিয়া কাকে বলে : যে ক্রিয়ার কোনো কর্ম থাকে, তাকে সকর্মক ক্রিয়া বলে। যেমন :
- স্বপন চিঠি লিখছে।
- কাঞ্চন বই পড়ছে।
অকর্মক ক্রিয়া কাকে বলে : যে ক্রিয়ার কোনো কর্ম থাকে না, তাকে অকর্মক ক্রিয়া বলে। যেমন :
- স্বপন লিখছে।
- কাঞ্চন পড়ছে।
দ্বিকর্মক ক্রিয়া কাকে বলে: যে ক্রিয়ার দুটি কর্ম থাকে তাকে দ্বিকর্মক ক্রিয়া বলে। যেমন :
- শিক্ষক ছাত্রদের বাংলা পড়াচ্ছেন।
- মা শিশুকে দুধ খাওয়াচ্ছেন।
প্রযোজক ক্রিয়া কাকে বলে : যে ক্রিয়া অন্যের দ্বারা চালিত হয়, তাকে প্রযোজক ক্রিয়া বলে। যেমন :
- মা খোকাকে চাঁদ দেখাচ্ছেন।
- সাপুড়ে সাপ খেলায়।
যৌগিক ক্রিয়া কাকে বলে : একটি সমাপিকা ক্রিয়া ও একটি অসমাপিকা ক্রিয়া মিলিত হয়ে যে ক্রিয়াপদ গঠিত হয়, তাকে যৌগিক ক্রিয়া বলে। যেমন :
- সে পাস করে গেল।
- সাইরেন বেজে উঠল।
সকর্মক ক্রিয়া কাকে বলে : যে ক্রিয়া পদের কর্ম থাকে তাকে সকর্মক ক্রিয়া বলে। বাক্যের ক্রিয়াকে কী বা কাকে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায়, তাই কর্মপদ। কর্মযুক্ত ক্ৰিয়াই সকর্মক ক্রিয়া। যেমন :
মা ভাত রান্না করছেন।
এ বাক্যে ক্রিয়াপদ হচ্ছে ‘রান্না করছেন’ ।
প্রশ্ন : কী রান্না করছেন ?
উত্তর : ভাত।
অতএব ‘রান্না করছেন’ ক্রিয়া পদটির কর্ম হচ্ছে ‘ভাত’। ‘রান্না করছেন’ সকর্মক ক্রিয়া।
অকর্মক ক্রিয়া : যে ক্রিয়ার কর্ম নেই, তাকে অকর্মক ক্রিয়া বলে। যেমন : সৌরভ পড়ে।
সৌরভ কী পড়ে? – অকর্মক ক্রিয়া।
এ প্রশ্নের উত্তর নেই। অর্থাৎ এ বাক্যে ‘পড়ে’ ক্রিয়াপদের কোনো কর্ম নেই। তাই ‘পড়ে’
প্রয়োগ—বৈশিষ্ট্যে সকর্মক ক্রিয়া অকর্মক ক্রিয়া হতে পারে। যেমন :
সকর্মক ক্রিয়া
১. আমি টিফিন খেয়েছি।
২. মাখন রায় গান গাচ্ছে।
অকর্মক ক্রিয়া
১. আমি টিফিনে খেয়েছি।
২. মাখন রায় গানে মজেছে।