- গুনাহ কি
- কবিরা গুনাহ কি কি
- গীবতের গুনাহ থেকে মাফের উপায় ও দোয়া
- শিরকের গুনাহ থেকে মাফের উপায় ও দোয়া
- জিনার গুনাহ থেকে মাফের উপায় ও দোয়া
গুনাহ বা পাপ কি?
গুনাহ বা পাপ ইসলামি ধর্মশাস্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ শব্দ। আল্লাহ্র নির্দেশের পরিপন্থী হয় এমন সকল কাজকেই গুনাহ বলা হয়। আল্লাহর কোনো আদেশ না মানা ও কোনো নিষেধ থেকে নিজেকে বিরত না রাখাই মূলত গুনাহ। বিশ্বাস করা হয় কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ প্রতিটি মানুষের ভালো ও মন্দ কাজ গুলোকে পরিমাপ করবেন এবং মন্দ কাজের জন্য তাদেরকে শাস্তি প্রদান করবেন। আল্লাহ ক্ষমা না করলে ঐ ব্যক্তি পরকালে জাহান্নাম (আরবি: جهنم) এর আগুনে দগ্ধ হবে।
কবিরা গুনাহ কি কি: কোনো ছোট গুনাহ বা পাপকে হালকা মনে করাও একটি কবিরা গুনাহ বা বড় পাপ। মাত্রাভেদে ও পরিণতির ভিত্তিতে কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে পাপকে ছগিরা ও কবিরা দুই ভাগে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। কবিরা গুনাহ সমূহের মধ্যে সবচেয়ে বড় হলো কুফর ও শিরক। কুফর মানে হলো আড়াল করা, গোপন করা, লুকানো এবং কৃতঘ্নতা বা অকৃতজ্ঞতা। কবিরা গুনাহের নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা নেই। নিচের কাজগুলোকে সাধারণত কবিরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত করা হয়:
- আল্লাহর সাথে শিরক করা।
- নামাজ পরিত্যাগ করা
- পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া
- অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যা করা।
- পিতা-মাতাকে অভিসম্পাত করা।
- যাদু-টোনা করা।
- এতিমের সম্পদ আত্মসাৎ করা।
- জিহাদের ময়দান থেকে থেকে পলায়ন।
- সতী-সাধ্বী মু‘মিন নারীর প্রতি অপবাদ দেওয়া।
- রোজা না রাখা।
- যাকাত আদায় না করা।
- ক্ষমতা থাকা সত্যেও হজ্জ আদায় না করা।
- যাদুর বৈধতায় বিশ্বাস করা।
- প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়া।
- অহংকার করা।
- চুগলখোরি করা (ঝগড়া লাগানোর উদ্দেশ্যে একজনের কথা আরেকজনের নিকট লাগোনো)।
- আত্মহত্যা করা।
- আত্মীয়তা সম্পর্ক ছিন্ন করা।
- অবৈধ পথে উপার্জিত অর্থ ভক্ষণ করা।
- উপকার করে খোটা দান করা।
- মাদক বা নেশা দ্রব্য গ্রহণ করা।
- মদ প্রস্তুত ও প্রচারে অংশ গ্রহণ করা।
- জুয়া খেলা।
- তকদির (ভাগ্য) অস্বীকার করা।
- অদৃশ্যের খবর জানার দাবী করা।
- গণকের কাছে ধর্না দেওয়া বা গণকের কাছে অদৃশ্যের খবর জানতে চাওয়া।
- পেশাব থেকে পবিত্র না থাকা।
- রাসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নামে মিথ্যা হাদিস বর্ণনা করা।
- মিথ্যা স্বপ্ন বর্ণনা করা।
- মিথ্যা কথা বলা।
- মিথ্যা কসম খাওয়া।
- মিথ্যা কসমের মাধ্যমে পণ্য বিক্রয় করা।
- জিনা-ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়া।
- সমকামিতায় লিপ্ত হওয়া।
- মানুষের গোপন কথা চুপিসারে শোনার চেষ্টা করা।
- হিল্লা তথা চুক্তি ভিত্তিক বিয়ে করা।
- যার জন্যে হিলা করা হয়।
- মানুষের বংশ মর্যাদায় আঘাত হানা।
- মৃতের উদ্দেশ্যে উচ্চস্বরে ক্রন্দন করা।
- মুসলিম সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা।
- কোন মুসলিমকে গালি দেওয়া অথবা তার সাথে মারামারিতে লিপ্ত হওয়া।
- খেলার ছলে কোন প্রাণীকে নিক্ষেপ যোগ্য অস্ত্রের লক্ষ্য বস্তু বানানো।
- কোন অপরাধীকে আশ্রয় দান করা।
- আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে পশু জবেহ করা।
- ওজনে কম দেওয়া।
- ঝগড়া-বিবাদে অশ্লীল ভাষা প্রয়োগ করা।
- ইসলামি আইনানুসারে বিচার বা শাসনকার্য পরিচালনা না করা।
- জমিনের সীমানা পরিবর্তন করা বা পরের জমি জবর দখল করা।
- গিবত তথা অসাক্ষাতে কারো দোষ চর্চা করা।
- দাঁত চিকন করা।
- সৌন্দর্যের উদ্দেশ্যে মুখমণ্ডলের চুল তুলে ফেলা বা চুল উঠিয়ে ভ্রু চিকন করা (ভ্রু প্লাগ করা)
- মাথায় অতিরিক্ত/ চুল সংযোগ করা (পরচুলা ব্যবহার করা)
- পুরুষের নারী বেশ ধারণ করা।
- নারীর পুরুষ বেশ ধারণ করা।
- বিপরীত লিঙ্গের প্রতি কামনার দৃষ্টিতে তাকানো।
- কবরকে মসজিদ হিসেবে গ্রহণ করা।
- পথিককে নিজের কাছে অতিরিক্ত পানি থাকার পরেও না দেওয়া।
- পুরুষের গোড়ালির নিচে ঝুলিয়ে পোশাক পরিধান করা।
- মুসলিম শাসকের সাথে কৃত বয়াত বা আনুগত্যের শপথ ভঙ্গ করা।
- ডাকাতি করা।
- চুরি করা।
- সুদ লেন-দেন করা, সুদ লেখা বা তাতে সাক্ষী থাকা।
- ঘুষ লেন-দেন করা।
- গনিমত (জিহাদের মাধ্যমে কাফেরদের নিকট থেকে প্রাপ্ত সম্পদ) বণ্টনের পূর্বে আত্মসাৎ করা।
- স্ত্রীর পায়ু পথে যৌন ক্রিয়া করা।
- জুলুম-অত্যাচার করা।
- অস্ত্র দ্বারা ভয় দেখানো বা তা দ্বারা কাউকে ইঙ্গিত করা।
- প্রতারণা বা ঠগবাজী করা।
- রিয়া বা লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে সৎ আমল করা।
- স্বর্ণ বা রৌপ্যের তৈরি পাত্র ব্যবহার করা।
- পুরুষের রেশমি পোশাক এবং স্বর্ণ ও রৌপ্য পরিধান করা।
- সাহাবিদেরকে গালি দেওয়া।
- নামাজরত ব্যক্তির সামনে দিয়ে গমন করা।
- মনিবের নিকট থেকে কৃতদাসের পলায়ন।
- ভ্রান্ত মতবাদ জাহেলি রীতিনীতি অথবা বিদআতের প্রতি আহবান করা।
- পবিত্র মক্কা ও মদিনায় কোনো অপকর্ম বা দুষ্কৃতি করা।
- কোন দুষ্কৃতিকারীকে প্রশ্রয় দেওয়া।
- আল্লাহর ব্যাপারে অনধিকার চর্চা করা।
- বিনা প্রয়োজনে তালাক চাওয়া।
- যে নারীর প্রতি তার স্বামী অসন্তুষ্ট।
- স্বামীর অবাধ্য হওয়া।
- স্ত্রী কর্তৃক স্বামীর অবদান অস্বীকার করা।
- স্বামী-স্ত্রীর মিলনের কথা জনসম্মুখে প্রকাশ করা।
- স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বিবাদ সৃষ্টি করা।
- বেশী বেশী অভিশাপ দেওয়া।
- বিশ্বাসঘাতকতা করা।
- অঙ্গীকার পূরণ না করা।
- আমানতের খিয়ানত করা।
- শরীরে উল্কি অঙ্কন করা বা ট্যাটু করা।
- ঋণ পরিশোধ না করা।
- বদ মেজাজি ও এমন অহংকারী যে উপদেশ গ্রহণ করে না।
- তাবিজ-কবজ, রিং, সুতা ইত্যাদি ঝুলানো।
- পরীক্ষায় নকল করা।
- ভেজাল পণ্য বিক্রয় করা।
- ইচ্ছাকৃত ভাবে জেনে শুনে অন্যায় বিচার করা।
- আল্লাহ বিধান ব্যতিরেকে বিচার-ফয়সালা করা।
- পার্থিব উদ্দেশ্যে দীনী ইলম (দীনের জ্ঞান) অর্জন করা।
- কোন ইলম (দীনের জ্ঞান) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে জানা সত্যেও তা গোপন করা।
- নিজের পিতা ছাড়া অন্যকে পিতা বলে দাবী করা।
- আল্লাহর রাস্তায় বাধা দেওয়া।
কবিরা গুনাহ মাফের উপায় ও দোয়া
কবিরা গুনাহ মানুষকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়। কেউ যদি তাওবা ব্যতীত কবিরা গুনাহ নিয়ে মৃত্যুবরণ করে তবে সে কৃত গুনাহের জন্য কিয়ামতের দিন যন্ত্রণাদায়ক শস্তির সম্মুখীন হবে। বান্দার জীবদ্দশায় বিভিন্ন নেক আমলের দ্বারা কবিরা গুনাহ মোচন হয়ে যায়। এমনই কিছু নেক-আমল হলোঃ
- বেশী বেশী ওজু করা।
- নামাজের জন্য মসজিদে যাওয়া।
- রুকু হতে উঠে “রাব্বানা লাকাল হামদ” বলা।
- বেশী বেশী দরূদ পাঠ করা।
ফরজ নামাজের পর সুবহানাল্লাহ ৩৩ বার, আলহামদুলিল্লাহ ৩৩ বার এবং আল্লাহু আকবার ৩৪ বার পাঠ করা এবং একবার (سُبْحَانَ اللهِ، اَلْحَمْدُ ِللهِ، اَللهُ أَكْبَرُ، لآ إلهَ إلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَ لَهُ الْحَمْدُ وَ هُوَ عَلَى كُلِّ شَيْئٍ قَدِيْرٌ ) সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকরাব। লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওহদাহু লা-শারিকালাহু লাহুল মুলকু ওলাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির” উক্ত দোয়া পাঠ করা।
গীবতের গুনাহ মাফের উপায়
যদি কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যক্তির গীবত যদি করে থাকেন তাহলে তাঁর কাছে থেকে ক্ষমা নিতে হবে। কারণ, এটা তাঁর হকের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ইচ্ছাকৃতভাবে তাঁর হক নষ্ট করেছেন, তাঁর হকের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে তাঁর কাছে থেকে ক্ষমা নিতে হবে। এখন যদি ক্ষমা নেয়ার কাজটি আপনার সাধ্যের বাইরে চলে যায় বা তিনি মারা গিয়ে থাকেন, তাহলে আল্লাহর কাছে তওবা করুন এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘নিঃসন্দেহে গিবতের একটি ক্ষতিপূরণ হলো, তুমি যার গিবত বা কুৎসা রটনায় লিপ্ত ছিলে তার জন্য এভাবে দোয়া করো-
‘হে আল্লাহ! তুমি আমার ও (যার গিবত করা হয়েছে) তার গোনাহ মাফ করে দাও।’ (মিশকাত)।
শিরকের গুনাহ থেকে মাফের উপায় ও দোয়া
সবচেয়ে বড় জঘন্য অপরাধ শিরক। এটি কবিরা গোনাহ। তাওবাহ ছাড়া আল্লাহ তাআলা শিরকের গোনাহ ক্ষমা করবেন না। কুরআনুল কারিমের শিরককে সবচেয়ে বড় জুলুম বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
হজরত লুকমান তার ছেলেকে শিরক করা থেকে বিরত থাকার নসিহত দেয়ার সময় এ কথা বলেন। কুরআনে এসেছে-
وَإِذْ قَالَ لُقْمَانُ لِابْنِهِ وَهُوَ يَعِظُهُ يَا بُنَيَّ لَا تُشْرِكْ بِاللَّهِ إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ
যখন লোকমান উপদেশচ্ছলে তার পুত্রকে বলল- হে ছেলে! আল্লাহর সঙ্গে শরিক করো না। নিশ্চয় আল্লাহর সঙ্গে (কাউকে) শরিক করা মহা জুলুম।’ (সুরা লোকমান : ১৩)
আল্লাহর সঙ্গে সব ধরনের ছোট-বড় জানা-অজানা শিরক থেকে বেঁচে থাকতে তাঁরই কাছে আশ্রয় কামনার দোয়া শিখিয়েছেন স্বয়ং বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তাহলো-
اَللَّهُمَّ اِنِّىْ اَعُوْذُبِكَ اَنْ أُشْرِكَ بِكَ وَ اَنَا أَعْلَمُ وَ اَسْتَغْفِرُكَ لِمَا لَا أَعْلَمُ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা আন উশরিকা বিকা ওয়া আনা আলামু ওয়া আসতাগফিরুকা লিমা লা আলামু। (মুসনাদে আহমাদ)
রাসুল (সা.) তাঁর প্রিয় সাহাবিদের এমন একটি দোয়া শিখিয়ে গেছেন, যা দৈনিক পড়লে যে কেউ মাত্র কয়েক সেকেন্ডেই শিরকমুক্ত হয়ে যেতে পারেন। দোয়াটি হলো :
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা আন উশরিকা বিকা ওয়া আনা আ’লামু, ওয়া আসতাগফিরুকা লিমা লা আ’লামু’।
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি সজ্ঞানে তোমার সাথে শিরক করা থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাই এবং যা আমার অজ্ঞাত, তা থেকেও তোমার কাছে ক্ষমা চাই।
জিনার গুনাহ থেকে মাফের উপায় ও দোয়া
কেউ যদি জিনাগ গুনা বা পাপের অপরাধে লিপ্ত হন, তখন তিনি সঙ্গে সঙ্গেই তওবা করে নেবেন। এটা যেহেতু খুব বড় অন্যায়, তাহলে অবশ্যই তিনি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবেন। আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তন করবেন। যদি সত্যিকার অর্থে, আন্তরিকতার সঙ্গে, এখলাসের সঙ্গে একবারে অকপটে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন তাহলে আল্লাহ বান্দাদের ক্ষমা করে দেবেন। রাসুল (সা.) হাদিসে বলেছেন, সত্যিকারের তওবা করলে আল্লাহ সব গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন। মহান আল্লাহ ক্ষমাশীল। তাই কোনো ব্যক্তি সত্যিকারভাবে আন্তরিকতা নিয়ে ক্ষমা চান, তাহলে অবশ্যই তিনি মাফ পাবেন। তবে, শর্ত আছে। সেটা হলো, মনে একটা রেখে মুখে আরেকটা বললে তওবা হবে না। তওবা শুধু মুখে বলার কাজ নয়। আপনাকে কাজের মধ্যে দিয়ে প্রমাণ করতে হবে। একেবারেই মন থেকে সংকল্প করতে হবে অপরাধ থেকে বেরিয়ে আসার জন্য। তাহলেই আল্লাহ ক্ষমা করে দেবেন।
ﺍﻟﻠﻬُﻢَّ ﺍﻏْﻔِﺮْ ﺫَﻧْﺒِﻲ ﻭَﻃَﻬِّﺮْ ﻗَﻠْﺒِﻲ، ﻭَﺣَﺼِّﻦْ ﻓَﺮْﺟِﻲ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাগফির যাম্বী- ওয়া ত্বহহির ক্বলবী- ওয়া হাছছিন ফারজী-
অর্থ: হে আল্লাহ, আমাকে ক্ষমা করুন। আমার অন্তরকে পরিষ্কার করুন এবং আমার চরিত্র রক্ষা করুন (আহমদ- ২২২১১)।
ﺍﻟﻠﻬﻢ ﺇﻧﻲ ﺃﻋﻮﺫ ﺑﻚ ﻣﻦ ﻣﻨﻜﺮﺍﺕ ﺍﻷﺧﻼﻕ، ﻭﺍﻷﻋﻤﺎﻝ، ﻭﺍﻷﻫﻮﺍﺀ
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আউ’-যুবিকা মিন মুনকাড়া-তিল আখলা-ক্বি ওয়াল আ’অমা-লি ওয়াল আহওয়া-অ।
অর্থ: হে আল্লাহ, আমি তোমার কাছে গর্হিত চরিত্র, গর্হিত কাজ ও কুপ্রবিত্তি হতে আশ্রয় চাই ( তিরমিযী)।
গুনাহ থেকে বাঁচার উপায়
পাপ ধ্বংস ডেকে আনে। গুনাহখাতা মাফের পদ্ধতি সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে বিভিন্ন আয়াতে বলা হয়েছে, ‘যখন তারা নিজেদের প্রতি জুলুম করে, তখন তারা তোমার কাছে এলে ও আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলে এবং রাসুলও তাদের জন্য ক্ষমা চাইলে তারা আল্লাহকে পরম ক্ষমাশীল ও অত্যন্ত দয়ালু হিসেবে পাবে।’ গুনাহ থেকে বাঁচর কিছু উপায় নিম্নে দেয়া হলো-
গুনাহ থেকে বাঁচতে আল্লাহ তাআলার কাছে বেশি বেশি কান্নাকাটি করে দোয়া। তিনি যেন তার অবাধ্যতা, নাফরমানি ও সব ধরনের গুনাহ থেকে রক্ষা করেন।
নফস তথা আত্মার সঙ্গে লড়াই করা, মনের কুমন্ত্রণা দূর করা এবং আল্লাহর আনুগত্যের মাধ্যমে অন্তরকে পরিশুদ্ধ করার চেষ্টা করা।
কিয়ামতের দিন গোপন গুনাহকারীদের আমলগুলো ধূলিকণার মতো উড়িয়ে দেওয়ার কথা চিন্তা করা।
আল্লাহ তাআলার উপস্থিতির কথা চিন্তা করা। তিনি আমাকে সর্বদা দেখছেন এবং এ ব্যাপারে তাঁকে ভয় করা।
গুনাহ করার সময় এ কথা চিন্তা করা, কেউ কি দেখলে আমি এমন গুনাহ করতে পারতাম? এভাবে নিজের ভেতরের লজ্জাবোধ জাগ্রত করা।
এ চিন্তা করা, গুনাহরত অবস্থায় যদি আমার মৃত্যু হয়, তাহলে কিভাবে আমি আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করব?
অবসরে জিকির ও ফিকিরে থাকার চেষ্টা করা। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয়ই আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টিতে, দিবস ও রাত্রির পরিবর্তনে নিদর্শনাবলি রয়েছে বোধশক্তিসম্পন্ন মানুষের জন্য। যারা দাঁড়িয়ে, বসে, শুয়ে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টি সম্পর্কে চিন্তা করে আর বলে, হে আমাদের রব! আপনি এগুলো নিরর্থক সৃষ্টি করেননি। আপনি পবিত্র। আপনি আমাদের জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষা করুন। ’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৯০-১৯১)। মহান আল্লাহ আমাদের গোপন গুনাহ থেকে বাঁচার তাওফিক দান করুন।
গুনাহ মাফের আমলগুলো কি কি
- প্রতিদিন ১০০ বার সুবহানাল্লাহ পড়া
- নবীর ভালোবাসা
- নবীর ওপর দরুদ পাঠ করা
- ফজর ও মাগরিব নামাজের পর নির্দিষ্ট দোয়া
- উত্তমরূপে অজু করা
- পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা
- জুমার নামাজ আদায় করা
- নামাজের জন্য মসজিদে গমন
- ফাতিহা শেষে আমিন বলা
- রুকু থেকে উঠে ‘রব্বানা লাকাল হামদ’ বলা
Photo By: aljazeera