পড়ে পাওয়া-গদ্যের শব্দার্থ-পাঠ ও লেখক পরিচিতি

শব্দার্থ

দিব্যি-চমৎকার। আশাতীতভাবে।

সংশয়-সন্দেহ। দ্বিধা।

গহনা-অলংকার।

অনাদৃত-অবহেলিত। উপেক্ষিত। গুরুত্ব দেওয়া হয়নি এমন ৷

বিচুলিগাদা-ধানের খড়ের স্তূপ।

নাটমন্দির-দেবমন্দিরে সামনের ঘর যেখানে নাচ-গান হয় ৷

বোষ্টম-হরিনাম সংকীর্তন করে জীবিকা অর্জন করে এমন বৈষ্ণব।

অপ্রতিভভাবে-বিব্রত বা লজ্জিতভাবে।

পত্রপাঠ বিদায়-তৎক্ষণাৎ বিদায়।

চৌকিদার-প্রহরী।

কাপালি-তান্ত্রিক হিন্দু সম্প্রদায়।

চণ্ডীমণ্ডপ-যে মণ্ডপে বা ছাদযুক্ত চত্বরে দুর্গা, কালী প্রভৃতি দেবীর পূজা হয় ৷

দণ্ডবৎ-মাটিতে পড়ে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম।

আড়ি-ধান, গম ইত্যাদির পরিমাপবিশেষ। ধান মাপার বেতের ঝুড়ি বা পাত্র।

পাঠ-পরিচিতি: এটি বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি বিখ্যাত কিশোর গল্প। এটি ‘নীলগঞ্জের ফালমন সাহেব গ্রন্থ থেকে সংকলিত। এ গল্পের কিশোররা কুড়িয়ে পাওয়া অর্থ সম্পদ নিয়ে লোভের পরিচয় দেয়নি। বরং তারা তাদের বয়সের চেয়েও অনেক বেশি দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছে। লেখক দেখিয়েছেন, বয়সে ছোট হলে কী হবে তাদের নৈতিক অবস্থানও বেশ দৃঢ়। এই গল্পে কিশোরদের ঐক্য চেতনার যেমন পরিচয় পাওয়া যায় তেমনি তাদের উন্নত মানবিক বোধেরও প্রকাশ ঘটেছে। তাদের চারিত্রিক দৃঢ়তার পাশাপাশি তীক্ষ্ণ বিবেচনাবোধও পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। কিশোরদের এমন সততা, নিষ্ঠা ও কর্তব্যবোধে বয়োজ্যেষ্ঠরাও বিস্মিত, অভিভূত। কিশোররা যখন ঐক্যবদ্ধ হয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তখন তারা তাদের মধ্যে যে সবচেয়ে বেশি বুদ্ধিমান ও বিবেচক তাকে মান্য করে তার ওপর আস্থা স্থাপন করে। এটি গল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। দরিদ্র অসহায় মানুষের প্রতি ভালোবাসার চিত্রও ফুটে উঠেছে এ গল্পে।

লেখক-পরিচিতি: বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম ১৮৯৪ খ্রিষ্টাব্দে চব্বিশ পরগনা জেলার মুরাতিপুর গ্রামে, মাতুলালয়ে। তাঁর পৈতৃক বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার ব্যারাকপুর গ্রামে। তাঁর বাল্য ও কৈশোরকাল কেটেছে দারিদ্র্যের মধ্যে। মাতার নাম মৃণালিনী দেবী। পিতা মহানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পেশা ছিল কথকতা ও পৌরোহিত্য। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এম.এ. পড়াকালে (১৯১৮) তাঁর প্রথম স্ত্রীর মৃত্যু ঘটলে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অসমাপ্ত থাকে। অতঃপর স্কুল শিক্ষকতাসহ নানা পেশায় তাঁর জীবন অতিবাহিত হয়। এর বাইশ বছর পরে তিনি দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন (১৯৪০)। ছোটগল্প, উপন্যাস, দিনলিপি ও ভ্রমণ— কাহিনি রচনার মধ্যেই তিনি জীবনের আনন্দ খুঁজে পান। তাঁর রচিত সাহিত্যে প্রকৃতি ও মানবজীবন এক অখণ্ড অবিচ্ছিন্ন সত্তায় সমন্বিত হয়েছে। তাঁর সাহিত্যে প্রকৃতির অনাবিল সৌন্দর্য ও গ্রামবাংলার সাধারণ মানুষের জীবনাচরণের সজীব ও নিখুঁত চিত্র অঙ্কিত হয়েছে। ‘পথের পাঁচালী’, ‘অপরাজিত’ উপন্যাস যেমন তাঁর শ্রেষ্ঠ কীর্তি তেমনি বাংলা সাহিত্যেরও অমূল্য সম্পদ। তাঁর অন্যান্য রচনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য উপন্যাস : ‘আরণ্যক’, ‘ইছামতী’; গল্পগ্রন্থ : ‘মেঘমল্লার’, ‘মৌরীফুল’; ভ্রমণ-দিনলিপি : ‘তৃণাঙ্কুর’, ‘স্মৃতির রেখা’; কিশোর উপন্যাস : ‘চাঁদের পাহাড়’, ‘মিসমিদের কবচ’, ‘হীরামানিক জ্বলে’। ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর জীবনাবসান ঘটে।

See also  ক্রিয়ার কাল কাকে বলে-কত প্রকার-কি কি ও উদাহরণ সহ

Related Posts

পড়ে পাওয়া-বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়-গুরুত্বপূর্ণ এমসিকিউ

১. 'পড়ে পাওয়া' গল্পে কোন সময়ের কথা বর্ণিত হয়েছে? ক. কালবৈশাখীর খ.কনকনে শীতের গ.ভরা ভাদরের ঘ.নব বসন্তের ২. বিধু, সিধু,...

Read moreDetails

পড়ে পাওয়া-বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়-পুরো গদ্য

কালবৈশাখীর সময়টা। আমাদের ছেলেবেলার কথা। বিধু, সিধু, নিধু, তিনু, বাদল এবং আরও অনেকে দুপুরের বিকট গরমের পর নদীর ঘাটে নাইতে...

Read moreDetails
x

Add New Playlist

Are you sure want to unlock this post?
Unlock left : 0
Are you sure want to cancel subscription?