সূরা আল-মাআরিজ (আরবি ভাষায়: المعارج) পবিত্র কুরআন শরীফের ৭০ তম সূরা, এর আয়াত অর্থাৎ বাক্য সংখ্যা ৪৪ এবং রূকু তথা অনুচ্ছেদ সংখ্যা ২। সূরা আল-মাআরিজ মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে।
আরবি: سَأَلَ سَائِلٌ بِعَذَابٍ وَاقِعٍ
উচ্চারণ: ছাআলা ছাইলুম বি‘আযা-বিওঁ ওয়াকি‘।
একব্যক্তি চাইল, সেই আযাব সংঘটিত হোক যা অবধারিত-
আরবি: لِّلْكَافِرِينَ لَيْسَ لَهُ دَافِعٌ
উচ্চারণ: লিলকা-ফিরীনা লাইছা লাহূদা-ফি‘।
কাফেরদের জন্যে, যার প্রতিরোধকারী কেউ নেই।
আরবি: مِّنَ اللَّهِ ذِي الْمَعَارِجِ
উচ্চারণ: মিনাল্লা-হি যিল মা‘আ-রিজ।
তা আসবে আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে, যিনি সমুন্নত মর্তবার অধিকারী।
আরবি: تَعْرُجُ الْمَلَائِكَةُ وَالرُّوحُ إِلَيْهِ فِي يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُهُ خَمْسِينَ أَلْفَ سَنَةٍ
উচ্চারণ: তা‘রুজুলমালাইকাতুওয়াররূহুইলাইহি ফী ইয়াওমিন কা-না মিকদা-রুহূখামছীনা আলফা ছানাহ।
ফেরেশতাগণ এবং রূহ আল্লাহ তা’আলার দিকে উর্ধ্বগামী হয় এমন একদিনে, যার পরিমাণ পঞ্চাশ হাজার বছর।
আরবি: فَاصْبِرْ صَبْرًا جَمِيلًا
উচ্চারণ: ফাসবির সাবরান জামীলা-।
অতএব, আপনি উত্তম সবর করুন।
আরবি: إِنَّهُمْ يَرَوْنَهُ بَعِيدًا
উচ্চারণ: ইন্নাহুম ইয়ারাওনাহূবা‘ঈদা।
তারা এই আযাবকে সুদূরপরাহত মনে করে,
আরবি: وَنَرَاهُ قَرِيبًا
উচ্চারণ: ওয়া নারা-হু কারীবা- ।
আর আমি একে আসন্ন দেখছি।
আরবি: يَوْمَ تَكُونُ السَّمَاءُ كَالْمُهْلِ
উচ্চারণ: ইয়াওমা তাকূনুছ ছামা-উ কালমুহল,।
সেদিন আকাশ হবে গলিত তামার মত।
আরবি: وَتَكُونُ الْجِبَالُ كَالْعِهْنِ
উচ্চারণ: ওয়া তাকূনুল জিবা-লুকাল‘ইহন।
এবং পর্বতসমূহ হবে রঙ্গীন পশমের মত,
আরবি: وَلَا يَسْأَلُ حَمِيمٌ حَمِيمًا
উচ্চারণ: ওয়ালা-ইয়াছআলুহামীমুন হামীমা- ।
বন্ধু বন্ধুর খবর নিবে না।
আরবি: يُبَصَّرُونَهُمْ ۚ يَوَدُّ الْمُجْرِمُ لَوْ يَفْتَدِي مِنْ عَذَابِ يَوْمِئِذٍ بِبَنِيهِ
উচ্চারণ: ইউবাসসারূনাহুম ইয়াওয়াদ্দুল মুজরিমুলাও ইয়াফতাদী মিন ‘আযা- বি ইয়াওমিইযিম ব্বিানীহ।
যদিও একে অপরকে দেখতে পাবে। সেদিন গোনাহগার ব্যক্তি পনস্বরূপ দিতে চাইবে তার সন্তান-সন্ততিকে,
আরবি: وَصَاحِبَتِهِ وَأَخِيهِ
উচ্চারণ: ওয়া সা-হিবাতিহী ওয়া আখীহ।
তার স্ত্রীকে, তার ভ্রাতাকে,
আরবি: وَفَصِيلَتِهِ الَّتِي تُؤْوِيهِ
উচ্চারণ: ওয়া ফাসীলাতিহিল্লাতী তু’বীহ।
তার গোষ্ঠীকে, যারা তাকে আশ্রয় দিত।
আরবি: وَمَن فِي الْأَرْضِ جَمِيعًا ثُمَّ يُنجِيهِ
উচ্চারণ: ওয়া মান ফিল আরদিজামী‘আন ছু ম্মা ইউনজীহ।
এবং পৃথিবীর সবকিছুকে, অতঃপর নিজেকে রক্ষা করতে চাইবে।
আরবি: كَلَّا ۖ إِنَّهَا لَظَىٰ
উচ্চারণ: কাল্লা- ইন্নাহা-লাজা-।
কখনই নয়। নিশ্চয় এটা লেলিহান অগ্নি।
আরবি: نَزَّاعَةً لِّلشَّوَىٰ
উচ্চারণ: নাঝঝা‘আতাল লিশশাওয়া-।
যা চামড়া তুলে দিবে।
আরবি: تَدْعُو مَنْ أَدْبَرَ وَتَوَلَّىٰ
উচ্চারণ: তাদ‘উ মান আদবারা ওয়া তাওয়াল্লা-।
সে সেই ব্যক্তিকে ডাকবে যে সত্যের প্রতি পৃষ্ঠপ্রদর্শন করেছিল ও বিমুখ হয়েছিল।
আরবি: وَجَمَعَ فَأَوْعَىٰ
উচ্চারণ: ওয়া জামা‘আ ফাআও‘আ-।
সম্পদ পুঞ্জীভূত করেছিল, অতঃপর আগলিয়ে রেখেছিল।
আরবি: إِنَّ الْإِنسَانَ خُلِقَ هَلُوعًا
উচ্চারণ: ইন্নাল ইনছা-না খুলিকা হালূ‘আ-।
মানুষ তো সৃজিত হয়েছে ভীরুরূপে।
আরবি: إِذَا مَسَّهُ الشَّرُّ جَزُوعًا
উচ্চারণ: ইযা- মাছছাহুশশাররু জাঝূ‘আ-।
যখন তাকে অনিষ্ট স্পর্শ করে, তখন সে হা-হুতাশ করে।
আরবি: وَإِذَا مَسَّهُ الْخَيْرُ مَنُوعًا
উচ্চারণ: ওয়া ইযা-মাছছাহুল খাইরু মানূ‘আ-।
আর যখন কল্যাণপ্রাপ্ত হয়, তখন কৃপণ হয়ে যায়।
আরবি: إِلَّا الْمُصَلِّينَ
উচ্চারণ: ইল্লাল মুসাল্লীন।
তবে তারা স্বতন্ত্র, যারা নামায আদায় কারী।
আরবি: الَّذِينَ هُمْ عَلَىٰ صَلَاتِهِمْ دَائِمُونَ
উচ্চারণ: আল্লাযীনা হুম ‘আলা-সালা-তিহিম দাইমূন।
যারা তাদের নামাযে সার্বক্ষণিক কায়েম থাকে।
আরবি: وَالَّذِينَ فِي أَمْوَالِهِمْ حَقٌّ مَّعْلُومٌ
উচ্চারণ: ওয়াল্লাযীনা ফীআমওয়া-লিহিম হাক্কুম মা‘লূম।
এবং যাদের ধন-সম্পদে নির্ধারিত হক আছে
আরবি: لِّلسَّائِلِ وَالْمَحْرُومِ
উচ্চারণ: লিছছাইলি ওয়াল মাহরূম।
যাঞ্ছাকারী ও বঞ্চিতের
আরবি: وَالَّذِينَ يُصَدِّقُونَ بِيَوْمِ الدِّينِ
উচ্চারণ: ওয়াল্লায়ীনা ইউসাদ্দিকূনা বিইয়াওমিদ্দীন।
এবং যারা প্রতিফল দিবসকে সত্য বলে বিশ্বাস করে।
আরবি: وَالَّذِينَ هُم مِّنْ عَذَابِ رَبِّهِم مُّشْفِقُونَ
উচ্চারণ: ওয়াল্লাযীনা হুম মিন ‘আযা-বি রাব্বিহিম মুশফিকূন।
এবং যারা তাদের পালনকর্তার শাস্তির সম্পর্কে ভীত-কম্পিত।
আরবি: إِنَّ عَذَابَ رَبِّهِمْ غَيْرُ مَأْمُونٍ
উচ্চারণ: ইন্না ‘আযা-বা রাব্বিহিম গাইরু মা’মূন।
নিশ্চয় তাদের পালনকর্তার শাস্তি থেকে নিঃশঙ্কা থাকা যায় না।
আরবি: وَالَّذِينَ هُمْ لِفُرُوجِهِمْ حَافِظُونَ
উচ্চারণ: ওয়াল্লাযীনাহুম লিফুরূজিহিম হা-ফিজূ ন।
এবং যারা তাদের যৌন-অঙ্গকে সংযত রাখে
আরবি: إِلَّا عَلَىٰ أَزْوَاجِهِمْ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُمْ فَإِنَّهُمْ غَيْرُ مَلُومِينَ
উচ্চারণ: ইল্লা-‘আলাআযওয়া-জিহিম আও মা-মালাকাত আইমা-নুহুম ফাইন্নাহুম গাইরু মালূমীন।
কিন্তু তাদের স্ত্রী অথবা মালিকানাভূক্ত দাসীদের বেলায় তিরস্কৃত হবে না।
আরবি: فَمَنِ ابْتَغَىٰ وَرَاءَ ذَٰلِكَ فَأُولَـٰئِكَ هُمُ الْعَادُونَ
উচ্চারণ: ফামানিবতাগা-ওয়ারা-আ যা-লিকা ফাউলাইকা হুমুল ‘আ-দূন।
অতএব, যারা এদের ছাড়া অন্যকে কামনা করে, তারাই সীমালংঘনকারী।
আরবি: وَالَّذِينَ هُمْ لِأَمَانَاتِهِمْ وَعَهْدِهِمْ رَاعُونَ
উচ্চারণ: ওয়াল্লাযীনা হুম লিআমা-না-তিহিম ওয়া ‘আহদিহিম রা-‘ঊন।
এবং যারা তাদের আমানত ও অঙ্গীকার রক্ষা করে
আরবি: وَالَّذِينَ هُم بِشَهَادَاتِهِمْ قَائِمُونَ
উচ্চারণ: ওয়াল্লাযীনা হুম বিশাহা-দা-তিহিম কাইমূন।
এবং যারা তাদের সাক্ষ্যদানে সরল-নিষ্ঠাবান
আরবি: وَالَّذِينَ هُمْ عَلَىٰ صَلَاتِهِمْ يُحَافِظُونَ
উচ্চারণ: ওয়াল্লাযীনা হুম ‘আলা-সালা-তিহিম ইউহা-ফিজূ ন।
এবং যারা তাদের নামাযে যত্নবান,
আরবি: أُولَـٰئِكَ فِي جَنَّاتٍ مُّكْرَمُونَ
উচ্চারণ: উলাইকা ফী জান্না-তিম মুকরামূন।
তারাই জান্নাতে সম্মানিত হবে।
আরবি: فَمَالِ الَّذِينَ كَفَرُوا قِبَلَكَ مُهْطِعِينَ
উচ্চারণ: ফামা-লিল্লাযীনা কাফারূ কিবালাকা মুহতি‘ঈন।
অতএব, কাফেরদের কি হল যে, তারা আপনার দিকে উর্ধ্বশ্বাসে ছুটে আসছে।
আরবি: عَنِ الْيَمِينِ وَعَنِ الشِّمَالِ عِزِينَ
উচ্চারণ: ‘আনিল ইয়ামীনি ওয়া‘আনিশশিমা-লি ‘ইঝীন।
ডান ও বামদিক থেকে দলে দলে।
আরবি: أَيَطْمَعُ كُلُّ امْرِئٍ مِّنْهُمْ أَن يُدْخَلَ جَنَّةَ نَعِيمٍ
উচ্চারণ: আইয়াতমা‘উ কুল্লুম রিইম মিনহুম আইঁ ইউদখালা জান্নাতা না‘ঈম।
তাদের প্রত্যেকেই কি আশা করে যে, তাকে নেয়ামতের জান্নাতে দাখিল করা হবে?
আরবি: كَلَّا ۖ إِنَّا خَلَقْنَاهُم مِّمَّا يَعْلَمُونَ
উচ্চারণ: কাল্লা ইন্না- খালাকনা-হুম মিম্মা-ইয়া‘লামূন।
কখনই নয়, আমি তাদেরকে এমন বস্তু দ্বারা সৃষ্টি করেছি, যা তারা জানে।
আরবি: فَلَا أُقْسِمُ بِرَبِّ الْمَشَارِقِ وَالْمَغَارِبِ إِنَّا لَقَادِرُونَ
উচ্চারণ: ফালাউকছিমুবিরাব্বিল মাশা-রিকিওয়াল মাগা-রিবি ইন্না- লাকা-দিরূন।
আমি শপথ করছি উদয়াচল ও অস্তাচলসমূহের পালনকর্তার, নিশ্চয়ই আমি সক্ষম!
আরবি: عَلَىٰ أَن نُّبَدِّلَ خَيْرًا مِّنْهُمْ وَمَا نَحْنُ بِمَسْبُوقِينَ
উচ্চারণ: ‘আলাআন নুবাদ্দিলা খাইরাম মিনহুম ওয়ামা-নাহনুবিমাছবূকীন।
তাদের পরিবর্তে উৎকৃষ্টতর মানুষ সৃষ্টি করতে এবং এটা আমার সাধ্যের অতীত নয়।
আরবি: فَذَرْهُمْ يَخُوضُوا وَيَلْعَبُوا حَتَّىٰ يُلَاقُوا يَوْمَهُمُ الَّذِي يُوعَدُونَ
উচ্চারণ: ফাযারহুম ইয়াখূদূওয়া ইয়াল‘আবূহাত্তা-ইউলা-কূইয়াওমাহুমুল্লাযী ইঊ‘আদূন।
অতএব, আপনি তাদেরকে ছেড়ে দিন, তারা বাকবিতন্ডা ও ক্রীড়া-কৌতুক করুক সেই দিবসের সম্মুখীন হওয়া পর্যন্ত, যে দিবসের ওয়াদা তাদের সাথে করা হচ্ছে।
আরবি: يَوْمَ يَخْرُجُونَ مِنَ الْأَجْدَاثِ سِرَاعًا كَأَنَّهُمْ إِلَىٰ نُصُبٍ يُوفِضُونَ
উচ্চারণ: ইয়াওমা ইয়াখরুজূনা মিনাল আজদা-ছিছিরা-‘আন কাআন্নাহুম ইলা-নুসুবিইঁ ইঊফিদূন।
সে দিন তারা কবর থেকে দ্রুতবেগে বের হবে, যেন তারা কোন এক লক্ষ্যস্থলের দিকে ছুটে যাচ্ছে।
আরবি: خَاشِعَةً أَبْصَارُهُمْ تَرْهَقُهُمْ ذِلَّةٌ ۚ ذَٰلِكَ الْيَوْمُ الَّذِي كَانُوا يُوعَدُونَ
উচ্চারণ: খা-শি‘আতান আবসা-রুহুম তারহাকুহুম যিল্লাতুন যা-লিকাল ইয়াওমুল্লাযী কা-নূ ইঊ‘আদূ ন।
তাদের দৃষ্টি থাকবে অবনমিত; তারা হবে হীনতাগ্রস্ত। এটাই সেইদিন, যার ওয়াদা তাদেরকে দেয়া হত।