সূরা আস-সাফ পবিত্র কুরআন শরীফের ৬১ তম সূরা, এর আয়াত অর্থাৎ বাক্য সংখ্যা ১৪ এবং রূকু তথা অনুচ্ছেদ সংখ্যা ২। সূরা আস-সাফ মদীনায় অবতীর্ণ হয়েছে।
আরবি: سَبَّحَ لِلَّهِ مَا فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِى ٱلْأَرْضِ وَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلْحَكِيمُ
উচ্চারণ: ছাব্বাহা লিল্লা-হি মা-ফিছছামা-ওয়া-তি ওয়ামা-ফিল আরদি ওয়া হুওয়াল ‘আঝীঝুল হাকীম।
বাংলা অর্থ: নভোমন্ডলে ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, সবই আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রান্ত প্রজ্ঞাবান।
আরবি: يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ لِمَ تَقُولُونَ مَا لَا تَفْعَلُونَ
উচ্চারণ: ইয়াআইয়ুহাল্লাযীনা আ-মানূলিমা তাকূলূনা মা-লা-তাফ‘আলূন।
বাংলা অর্থ: মুমিনগণ! তোমরা যা কর না, তা কেন বল?
আরবি: كَبُرَ مَقْتًا عِندَ ٱللَّهِ أَن تَقُولُوا۟ مَا لَا تَفْعَلُونَ
উচ্চারণ: কাবুরা মাকতান ‘ইনদাল্লা-হি আন তাকূলূমা-লা-তাফ‘আলূন।
বাংলা অর্থ: তোমরা যা কর না, তা বলা আল্লাহর কাছে খুবই অসন্তোষজনক।
আরবি: إِنَّ ٱللَّهَ يُحِبُّ ٱلَّذِينَ يُقَٰتِلُونَ فِى سَبِيلِهِۦ صَفًّا كَأَنَّهُم بُنْيَٰنٌ مَّرْصُوصٌ
উচ্চারণ: ইন্নাল্লা-হা ইউহিব্বুল্লাযীনা ইউকা-তিলূনা ফী ছাবীলিহী সাফফান কাআন্নাহুম বুনয়া-নুম মারসূস।
বাংলা অর্থ: আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন, যারা তাঁর পথে সারিবদ্ধভাবে লড়াই করে, যেন তারা সীসাগালানো প্রাচীর।
আরবি: وَإِذْ قَالَ مُوسَىٰ لِقَوْمِهِۦ يَٰقَوْمِ لِمَ تُؤْذُونَنِى وَقَد تَّعْلَمُونَ أَنِّى رَسُولُ ٱللَّهِ إِلَيْكُمْ فَلَمَّا زَاغُوٓا۟ أَزَاغَ ٱللَّهُ قُلُوبَهُمْ وَٱللَّهُ لَا يَهْدِى ٱلْقَوْمَ ٱلْفَٰسِقِينَ
উচ্চারণ: ওয়া ইযকা-লা মূছা-লিকাওমিহী ইয়া-কাওমি লিমা তু’যূনানী ওয়া কাততা‘লামূনা আন্নী রাছূলুল্লা-হি ইলাইকুম ফালাম্মা-ঝা-গূআঝা-গাল্লা-হু কুলূবাহুম ওয়াল্লা-হু লাইয়াহদিল কাওমাল ফা-ছিকীন।
বাংলা অর্থ: স্মরণ কর, যখন মূসা (আঃ) তাঁর সম্প্রদায়কে বললঃ হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা কেন আমাকে কষ্ট দাও, অথচ তোমরা জান যে, আমি তোমাদের কাছে আল্লাহর রসূল। অতঃপর তারা যখন বক্রতা অবলম্বন করল, তখন আল্লাহ তাদের অন্তরকে বক্র করে দিলেন। আল্লাহ পাপাচারী সম্প্রদায়কে পথপ্রদর্শন করেন না।
আরবি: وَإِذْ قَالَ عِيسَى ٱبْنُ مَرْيَمَ يَٰبَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ إِنِّى رَسُولُ ٱللَّهِ إِلَيْكُم مُّصَدِّقًا لِّمَا بَيْنَ يَدَىَّ مِنَ ٱلتَّوْرَىٰةِ وَمُبَشِّرًۢا بِرَسُولٍ يَأْتِى مِنۢ بَعْدِى ٱسْمُهُۥٓ أَحْمَدُ فَلَمَّا جَآءَهُم بِٱلْبَيِّنَٰتِ قَالُوا۟ هَٰذَا سِحْرٌ مُّبِينٌ
উচ্চারণ: ওয়া ইযকা-লা ‘ঈছাবুন মারইয়ামা ইয়া-বানীইছরাঈলা ইন্নী রাছূলুল্লা-হি ইলাকুম মুসাদ্দিকাল লিমা বাইনা ইয়াদাইইয়া মিনাত্তাওরা-তি ওয়া মুবাশশিরাম বিরাছূলিইঁ ইয়া’তী মিম বা‘দিছমূহূআহমাদু ফালাম্মা-জাআহুম বিলবাইয়িনা-তি কা-লূহা-যা-ছিহরুম মুবীন।
বাংলা অর্থ: রণ কর, যখন মরিয়ম-তনয় ঈসা (আঃ) বললঃ হে বনী ইসরাইল! আমি তোমাদের কাছে আল্লাহর প্রেরিত রসূল, আমার পূর্ববর্তী তওরাতের আমি সত্যায়নকারী এবং আমি এমন একজন রসূলের সুসংবাদদাতা, যিনি আমার পরে আগমন করবেন। তাঁর নাম আহমদ। অতঃপর যখন সে স্পষ্ট প্রমাণাদি নিয়ে আগমন করল, তখন তারা বললঃ এ তো এক প্রকাশ্য যাদু।
আরবি: وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنِ ٱفْتَرَىٰ عَلَى ٱللَّهِ ٱلْكَذِبَ وَهُوَ يُدْعَىٰٓ إِلَى ٱلْإِسْلَٰمِ وَٱللَّهُ لَا يَهْدِى ٱلْقَوْمَ ٱلظَّٰلِمِينَ
উচ্চারণ: ওয়া মান আজলামুমিম্মানিফ তারা-‘আলাল্লা-হিল কাযিবা ওয়া হুওয়া ইউদ‘আইলাল ইছলা-মি ওয়াল্লা-হু লা-ইয়াহদিল কাওমাজ্জা-লিমীন।
বাংলা অর্থ: যে ব্যক্তি ইসলামের দিকে আহুত হয়েও আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা বলে; তার চাইতে অধিক যালেম আর কে? আল্লাহ যালেম সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করেন না।
আরবি: يُرِيدُونَ لِيُطْفِـُٔوا۟ نُورَ ٱللَّهِ بِأَفْوَٰهِهِمْ وَٱللَّهُ مُتِمُّ نُورِهِۦ وَلَوْ كَرِهَ ٱلْكَٰفِرُونَ
উচ্চারণ: ইউরীদূনা লিইউতফিউ নূরাল্লা-হি বিআফওয়া-হিহিম ওয়াল্লা-হুমুতিম্মুনূরিহী ওয়ালাও কারিহাল কা-ফিরূন।
বাংলা অর্থ: তারা মুখের ফুঁৎকারে আল্লাহর আলো নিভিয়ে দিতে চায়। আল্লাহ তাঁর আলোকে পূর্ণরূপে বিকশিত করবেন যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে।
আরবি: هُوَ ٱلَّذِىٓ أَرْسَلَ رَسُولَهُۥ بِٱلْهُدَىٰ وَدِينِ ٱلْحَقِّ لِيُظْهِرَهُۥ عَلَى ٱلدِّينِ كُلِّهِۦ وَلَوْ كَرِهَ ٱلْمُشْرِكُونَ
উচ্চারণ: হুওয়াল্লাযীআরছালা রাছূলাহূবিলহুদা-ওয়া দীনিল হাক্কি লিইউজহিরাহূ‘আলাদ্দীনি কুল্লিহী ওয়া লাও কারিহাল মুশরিকূন।
বাংলা অর্থ: তিনি তাঁর রসূলকে পথ নির্দেশ ও সত্যধর্ম নিয়ে প্রেরণ করেছেন, যাতে একে সবধর্মের উপর প্রবল করে দেন যদিও মুশরিকরা তা অপছন্দ করে।
আরবি: يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ هَلْ أَدُلُّكُمْ عَلَىٰ تِجَٰرَةٍ تُنجِيكُم مِّنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ
উচ্চারণ: ইয়া-আইয়ুহাল্লাযীনা আ-মানূহাল আদুল্লুকুমআলা-তিজা-রাতিন তুনজীকুমমিন‘আযা-বিন আলীম।
বাংলা অর্থ: মুমিনগণ, আমি কি তোমাদেরকে এমন এক বানিজ্যের সন্ধান দিব, যা তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে মুক্তি দেবে?
আরবি: تُؤْمِنُونَ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ وَتُجَٰهِدُونَ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ بِأَمْوَٰلِكُمْ وَأَنفُسِكُمْ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ
উচ্চারণ: তু’মিনূনা বিল্লা-হি ওয়া রাছূলিহী ওয়া তুজা-হিদূ না ফী ছাবীলিল্লা-হি বিআমওয়া-লিকুম ওয়া আনফুছিকুম যা-লিকুম খাইরুল্লাকুম ইন কুনতুম তা‘লামূন।
বাংলা অর্থ: তা এই যে, তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে এবং আল্লাহর পথে নিজেদের ধন-সম্পদ ও জীবনপণ করে জেহাদ করবে। এটাই তোমাদের জন্যে উত্তম; যদি তোমরা বোঝ।
আরবি: يَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَيُدْخِلْكُمْ جَنَّٰتٍ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا ٱلْأَنْهَٰرُ وَمَسَٰكِنَ طَيِّبَةً فِى جَنَّٰتِ عَدْنٍ ذَٰلِكَ ٱلْفَوْزُ ٱلْعَظِيمُ
উচ্চারণ: ইয়াগফিরলাকুম যুনূবাকুম ওয়া ইউদখিলকুম জান্না-তিন তাজরী মিন তাহতিহাল আনহা-রু ওয়া মাছা-কিনা তাইয়িবাতান ফী জান্না-তি ‘আদনিন যা-লিকাল ফাওঝুল ‘আজীম।
বাংলা অর্থ: তিনি তোমাদের পাপরাশি ক্ষমা করবেন এবং এমন জান্নাতে দাখিল করবেন, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত এবং বসবাসের জান্নাতে উত্তম বাসগৃহে। এটা মহাসাফল্য।
আরবি: وَأُخْرَىٰ تُحِبُّونَهَا نَصْرٌ مِّنَ ٱللَّهِ وَفَتْحٌ قَرِيبٌ وَبَشِّرِ ٱلْمُؤْمِنِينَ
উচ্চারণ: উখরা-তুহিববূনাহা- নাসরুম মিনাল্লা-হি ওয়া ফাতহুন কারীব ওয়া বাশশিরিল মু’মিনীন।
বাংলা অর্থ: এবং আরও একটি অনুগ্রহ দিবেন, যা তোমরা পছন্দ কর। আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য এবং আসন্ন বিজয়। মুমিনদেরকে এর সুসংবাদ দান করুন।
আরবি: يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ كُونُوٓا۟ أَنصَارَ ٱللَّهِ كَمَا قَالَ عِيسَى ٱبْنُ مَرْيَمَ لِلْحَوَارِيِّۦنَ مَنْ أَنصَارِىٓ إِلَى ٱللَّهِ قَالَ ٱلْحَوَارِيُّونَ نَحْنُ أَنصَارُ ٱللَّهِ فَـَٔامَنَت طَّآئِفَةٌ مِّنۢ بَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ وَكَفَرَت طَّآئِفَةٌ فَأَيَّدْنَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ عَلَىٰ عَدُوِّهِمْ فَأَصْبَحُوا۟ ظَٰهِرِينَ
উচ্চারণ: ইয়াআইয়ুহাল্লাযীনা আ-মানূকূনূআনসা-রাল্লা-হি কামা-কা-লা ‘ঈছাবনুমারইয়ামা লিলহাওয়া-বিইয়ীনা মান আনসা-রী-ইলাল্লা-হি কা-লাল হাওয়া-রিইয়ূনা নাহনুআনসারুল্লা-হি ফাআ-মানাত্তাইফাতুমমিম বানীইছরাঈলা ওয়া কাফারাততাইফাতুন ফাআইঁয়াদনাল্লাযীনা আ-মানূ‘আলা-‘আদুওবিহিম ফাআসবাহূ জা-হিরীন।
বাংলা অর্থ: মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহর সাহায্যকারী হয়ে যাও, যেমন ঈসা ইবনে-মরিয়ম তার শিষ্যবর্গকে বলেছিল, আল্লাহর পথে কে আমার সাহায্যকারী হবে? শিষ্যবর্গ বলেছিলঃ আমরা আল্লাহর পথে সাহায্যকারী। অতঃপর বনী-ইসরাঈলের একদল বিশ্বাস স্থাপন করল এবং একদল কাফের হয়ে গেল। যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছিল, আমি তাদেরকে তাদের শত্রুদের মোকাবেলায় শক্তি যোগালাম, ফলে তারা বিজয়ী হল।