পাছে লোকে কিছু বলে কবিতার গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

পাছে লোকে কিছু বলে কবিতার

অষ্টম শ্রেণির পাছে লোকে কিছু বলে-কবিতাটি লিখেছেন কামিনী রায়। এই কবিতার গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর নিচে দেয়া হলো-

১. সৃজনশীল প্রশ্ন:
নিন্দুকেরে বাসি আমি সবার চেয়ে ভালো যুগ-জনমের বন্ধু আমার আধার ঘরের আলো। সবাই মোরে ছাড়তে পারে বন্ধু যারা আছে নিন্দুক সে ছায়ার মতো থাকবে পাছে পাছে। বিশ্বজনে নিঃস্ব করে, পবিত্রতা আনে সাধক জ্ঞানে নিস্তারিতে তার মতো কে জানে? বিনামূল্যে ময়লা ধুয়ে করে পরিষ্কার, বিশ্ব মাঝে এমন দয়াল মিলবে কোথা আর? নিন্দুক সে বেঁচে থাকুক বিশ্বজিতের তরে, আমার আশা পূর্ণ হবে তাহার কৃপা ভরে।

READ ALSO

ক. ‘সদা’ শব্দটির অর্থ কী?
খ.সংশয়ে সংকল্প সদা টলে কেন?
গ. উদ্দীপকের নিন্দুক ও ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় নিন্দুকের বৈসাদৃশ্যের দিকটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ.উদ্দীপকের নিন্দুকের প্রভাব আর ‘পাছে লোকে কিছু বলে কবিতায় বর্ণিত নিন্দুকের প্রভাবকে একসূত্রে গাঁথা যায় কী? যুক্তিসহ বুঝিয়ে লেখ।

১.নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

ক. ‘সদা’ শব্দটির অর্থ সবসময়।

খ. লোকলজ্জা ও সমালোচনার ভয়ে সংশয়ে সংকল্প সদা টলে। কোনো কাজ করতে গেলে মনে হয় লোকে কী বলবে, কী মনে করবে। লোকের কথার ভয়ে সংকুচিত হয়ে যায় ব্যক্তির উদ্যম। মনের ভেতর সংশয় কাজ করলে সংকল্পকে বাস্তবে রূপদান করা কঠিন হয়ে পড়ে। কারণ কোনো কাজ করতে গিয়ে লজ্জার মুখে পড়তে হয় কিনা এই জন্য কোনো প্রকার ভালো কাজ করতে গেলে মনের সংশয় দানাবেঁধে ওঠে।

গ. উদ্দীপকের নিন্দুক ও পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় দ্বিধা ও সংকোচের দিক দিয়ে বৈশাদৃশ্য লক্ষ করা যায়।
‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় সমাজের একশ্রেণির মানুষের চিত্র ফুটে উঠেছে যারা কোনো কাজ করতে গেলে মানুষের সমলোচনার ভয়ে দ্বিধাগ্রস্ত হয়। এ কারণে তারা ভালো কাজে এগিয়ে যায় না। ফলে তাদের দ্বারা সমাজের কোনো উন্নতি হয় না।
উদ্দীপকে নিন্দুকের যে দিকটি ফুটে উঠেছে তা প্রশংসাসূচক এবং ইতিবাচক। এখানে কবি নিন্দুকের জয়গান করেছেন। নিন্দুকেরা কবির অনিষ্ট চিন্তা করেন বলেই কবি তাদের সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন। নিন্দুকের ইতিবাচক দিক হিসেবে কবি উল্লেখ করেছেন যে, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন সকলেই কবিকে ছেড়ে যেতে পারে কিন্তু নিন্দুক কখনই কবিকে ছেড়ে যাবে না। অর্থাৎ কবির দোষত্রুটিগুলো সে খুঁজে বের করে দিয়ে কবিকে শুদ্ধ হতে সাহায্য করে। কবির জীবনে এই পরিশুদ্ধতার জন্য তিনি নিন্দুকদের সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন। তাই বলা যায় উদ্দীপকের নিন্দুক ও ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার নিন্দুকের মধ্যে বৈসাদৃশ্য বিদ্যমান।

ঘ. উদ্দীপকে নিন্দুকের প্রভাব ইতিবাচক এবং ‘পাছে লোকে কিছু বলে কবিতায় নিন্দুকের প্রভাব নেতিবাচক হওয়ায় উভয়ের প্রভাবকে একসূত্রে গাঁথা যায় না। কামিনী রায় ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় নিন্দুকের প্রভাবে কোনো কাজ হয় না বলে জানিয়েছেন। নিন্দুকের সমালোচনায় কবির সংকল্প সংশয়ে টলে ওঠে। নিজেকে কাজ থেকে গুটিয়ে রাখেন কবি। শুধু চিন্তাকে বিনষ্ট করেছেন নিন্দুকের ভয়ে। মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে কোনো কাজে অগ্রসর হলেও লোকলজ্জার ভয়ে তা সম্পন্ন করতে পারেন না। কবির শক্তি ভীতসন্ত্রস্ত হৃদয়ের কারণে দমে যায়। উদ্দীপকে কবি নিন্দুকের প্রভাবকে তার জীবনে আশীর্বাদ হিসেবে দেখেছেন। কবি নিন্দুককে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বন্ধু হিসেবে কল্পনা করেছেন। বন্ধুর চেয়ে নিন্দুককে কবি আপন মনে করেছেন। বিশ্বের মানুষের সমালোচনা করে বলে মানুষ দোষত্রুটি সংশোধনের সুযোগ পায়। এভাবেই নিন্দুক পবিত্রতা আনে। নিন্দুককে কবি দয়াল হিসেবে দেখেছেন। কারণ নিন্দুকই কবির আশা পূরণ করতে সহায়তা করবে। কবির জীবনে নিন্দুকের প্রভাব আশীর্বাদস্বরূপ। তাই কবি নিন্দুকের দীর্ঘ আয়ু কামনা করেছেন। উদ্দীপকের নিন্দুক কবিকে নিন্দার মাধ্যমে সংশোধনের সুযোগ দিয়েছে। ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় কবি নিন্দুকের ভয়ে ভীত। তার জীবনে নিন্দুক নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে উপস্থিত। উপস্থিত হয়েছে।উল্লিখিত আলোচনায় দেখা যায় যে, উদ্দীপকের নিন্দুকের প্রভাব আর ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় বর্ণিত নিন্দুকের প্রভাবকে একসূত্রে গাঁথা যায় না।

২. সৃজনশীল প্রশ্ন: নিপুণ শারীরিক প্রতিবন্ধী। পা দিয়ে লিখে এইচএসসি পরীক্ষা পাস করেছে। লেখাপড়া করে এইটুকু আসতে তাকে অনেক বাধা পার হতে হয়েছে। মা-বাবার সহযােগিতা ছাড়া যা কখনােই সম্ভব ছিল না। সমাজের কিছু মানুষের মুখের কথা শুনলে তার হয়তাে পড়ালেখাই হতাে না। পাস করার পর নিপুণ অতি আনন্দে কেঁদে কেঁদে বলেছিল, “আমাদের মতাে মানুষদের এগিয়ে যেতে সহায়তা করুন।”

ক. কীসে কবির ব্যথা প্রশমিত হয়?
খ. আড়ালে আড়ালে থাকি, নীরবে আপনা ঢাকি’ কেন?
গ. উদ্দীপকে উল্লেখিত সমাজের কিছু মানুষের আচরণে ‘পাছে লােকে কিছু বলে’ কবিতার যে বিশেষ দিকটি ফুটে উঠেছে, তা ব্যাখ্যা করাে।
ঘ. “নিপুণের মতাে দৃঢ়চেতা মনােভাব সৃষ্টিই পাছে লােকে কিছু বলে’ কবিতার মূলভাব” —মন্তব্যটির যথার্থতা নিরূপণ করাে।

২. নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক. একটি স্নেহের কথায় কবির ব্যথা প্রশমিত হয়।

খ. লােকলজ্জা ও সমালােচনার ভয়ে কবি আড়ালে নিজেকে ঢেকে রাখেন। পাছে লােকে কিছু বলে’ কবিতায় কবি সমালােচনার ভয়ে ভীত। তাই তিনি কোনাে কাজ করতে গেলে দ্বিধাবিভক্ত হন। কোনাে ভালাে কাজ করতে গিয়ে কে কী মনে করবে বা কে কী বলবে ভেবে কবি পিছু হটে যান। সমালােচকদের ভয়ে কবির আর সে কাজ করা হয়ে ওঠে না। তাদের ভয়েই মূলত কবি নিজেকে আড়ালে লুকিয়ে রাখেন।

গ.উদ্দীপকে উল্লেখিত সমাজের কিছু মানুষের আচরণে ‘পাছে লােকে কিছু বলে’ কবিতার সমালােচকদের স্বরূপ ফুটে উঠেছে।আলােচ্য কবিতায় কবি সমালােচকদের স্বরূপ তুলে ধরেছেন। এই শ্রেণির মানুষের কাজই হলাে সমালােচনা বা নিন্দা করা। তাদের এই মানসিকতার কারণে অনেক সময় ভালাে কাজ করতে গিয়েও অনেকে পিছিয়ে যায়। কেউ সমাজের জন্য কোনাে অবদান রাখতে চাইলে এ ধরনের মানুষ তাদের সমালােচনা করে। ফলে লােকলজ্জা ও সংকোচের কারণে ভালাে কাজ করতে গিয়েও পিছিয়ে আসতে হয়।উদ্দীপকে সমাজের কিছু মানুষের আচরণে নিন্দুকের স্বভাব প্রকাশ পেয়েছে। সেখানে নিপুণ শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও পা দিয়ে লিখে এইচএসসি পরীক্ষায় পাস করেছে। কিন্তু নিপুণের এই উদ্যমী মানসিকতাকে সমাজের একশ্রেণির মানুষ দমিয়ে দিতে চেয়েছিল। তারা সমালােচনা করে নিপুণের উদ্যমে ব্যঘাত ঘটাতে চায়। আর এরূপ মানসিকতা পাছে লােকে কিছু বলে কবিতায়ও পরিলক্ষিত হয়। সেখানে সমালােচক শ্রেণির মানুষের মাঝে এই বৈশিষ্ট্য প্রকট হয়ে উঠেছে। ফলে উদ্দীপকের কিছু মানুষের আচরণ পাহে লােকে কিছু বলে’ কবিতার সমালােচক শ্রেণির মানুষের দিকটিকেই ধারণ করেছে।

ঘ. পাছে লােকে কিছু বলে’ কবিতার কবির প্রত্যাশা দৃঢ় মনােভাব নিয়ে ভয়ভীতি ও লােকলজ্জাকে উপেক্ষা করে এগিয়ে যাওয়া, যা উদ্দীপকের নিপুণের মাঝে প্রকাশ পাওয়ায় প্রশ্লোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ হয়ে উঠেছে।পাছে লােকে কিছু বলে’ কবিতায় কবি সমালােচকদের স্বরূপ তুলে ধরেছেন। সমাজের জন্য ভালাে কাজ করতে গেলে এই সমালােচক শ্রেণির মানুষদের উপেক্ষা করা প্রয়ােজন। তাদের ভয়ে ঘরে বসে থাকলে লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া যাবে না। তাই সব ভয়ভীতি সংকোচ উপেক্ষা করেই এগিয়ে যেতে হবে। আর তাহলেই সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে সবাই অবদান রাখতে পারবে। কবিতায় প্রচ্ছন্নভাবে কবি সেই প্রত্যাশাই প্রকাশ করেছেন। উদ্দীপকে নিপুণের মাঝে লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় পরিলক্ষিত হয়। এক্ষেত্রে তার মা-বাবার অবদানও কম নয়। সমাজের একশ্রেণির মানুষের সমালােচনা উপেক্ষা করে নিপুণ পা দিয়ে লিখেই এইচএসসি পাস করেছে। কারাে কথায় দমে না গিয়ে সব বাধাবিঘ্ন পেরিয়ে নিপুণ দৃঢ় প্রত্যয়ে এগিয়ে গিয়েছে। আর এই দৃঢ়চেতা মনােভাবই নিপুণকে এগিয়ে যেতে সহায়তা করেছে। পাছে লােকে কিছু বলে’ কবিতায় কবি সবার মাঝে দৃঢ় মনােভাব সৃষ্টির আকাক্ষা ব্যক্ত করেছেন। তিনি প্রত্যাশা করেছেন সৰ ভয়ভীতি সংকোচ উপেক্ষা করে সবাই দৃঢ় মনােভাব নিয়ে লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে। আর এই মনােভাব উদ্দীপকের নিপুণের মাঝেও সমভাবে প্রকাশ পেয়েছে। মূলত কবি সমাজ বিনির্মাণে উদ্দীপকের নিপুণের মতােই মানুষের কামনাই করেছেন। তাই বলা যায়, “নিপুণের মতাে দৃঢ়চেতা মনােভাব সৃষ্টিই পাছে লােকে কিছু বলে’ কবিতার মূলভাব” -প্রশ্নোত, এই মন্তব্যটি যথার্থ।

৩. সৃজনশীল প্রশ্ন: অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী মুনিম। ক্লাসে শিক্ষক যখন পাঠদান করেন, তখন সে চুপচাপ শুনে থাকে। তার মনে অনেক প্রশ্ন জাগে, কিন্তু সে কোনাে প্রশ্ন করে না, লজ্জা পায়। সব সময় ভয়ে তটস্থ থাকে এবং যেকোনাে কাজে নিজেকে গুটিয়ে রাখে। অপরদিকে, সােহেল শিক্ষকের পাঠদানের ফাঁকে প্রয়ােজনীয় প্রশ্ন করে বিষয়টি ভালােভাবে বুঝতে চেষ্টা করে।

See also  There is something wrong with-এর ব্যবহার উদাহরণ সহ

ক. শক্তি কীসের কবলে মরে?
খ. স্নেহের কথা কীভাবে ব্যথা প্রশমন করতে পারে? ব্যাখ্যা করাে।
গ. উদ্দীপকের মুনিমের মধ্যে ‘পাছে লােকে কিছু বলে’ কবিতার যে দিকটি ফুটে উঠেছে, তা ব্যাখ্যা করাে
ঘ. “উদ্দীপকের সােহেলই পাছে লােকে কিছু বলে’ কবিতার কবির প্রত্যাশিত ব্যক্তি।”- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করাে।

৩. সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

ক. শক্তি ভীতির কবলে মরে।

খ. মানুষের জীবনে দুঃখ-যন্ত্রণা নেমে এলে একটু স্নেহপূর্ণ কথাই মনের ব্যথাকে প্রশমিত করতে পারে।মানুষের জীবন সরলরৈখিক নয়। জীবনে নানা ঘাত-প্রতিঘাত আসবে, আসবে দুঃখ-যন্ত্রণা। বিষাদময় এই সময়ে মানুষ শুনতে চায় কারাে স্নেহপূর্ণ কথা, সে পেতে চায় একটুখানি মমতা, যা তাকে মানসিকভাবে একটুখানি শান্তি দিতে পারে। আলােচ্য অংশে এ বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছে।

গ. উদ্দীপকের মুনিমের মধ্যে ‘পাছে লােকে কিছু বলে’ কবিতার দ্বিধা ও সংকোচের দিকটি ফুটে উঠেছে। দ্বিধা ও সংকোচ মানুষকে যেকোনাে কাজ থেকে দমিয়ে রাখে। এ কারণে মনের মধ্যে অনেক সুন্দর চিন্তা ও ভালাে কাজের অনুপ্রেরণা এলেও তা বাস্তবায়িত হয় না। পাছে লােকে কিছু বলে’ কবিতায় কবি এমন এক শ্রেণির মানুষের কথা বলেছেন যারা সমালােচনার ভয়ে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু দ্বিধা ও সংকোচ নিয়ে কখনাে সফলতা পাওয়া যায় না। উদ্দীপকের মুনিম ক্লাসে শিক্ষকের পাঠদানের সময় নিপ থাকে। তার মনে অনেক প্রশ্ন তৈরি হলেও লজ্জা ও দ্বিধায় কিছু বলতে পারে না। ভয়ে তটস্থ হয়ে সব সময় নিজেকে গুটিয়ে রাখে। মুনিমের আচরণের মধ্যে যে দ্বিধার পরিচয় পাওয়া যায়, তা কবিতার ভাববস্তুতেও ফুটে ওঠে। কবিতায় কবি বলেন, লােকলজ্জা ও দ্বিধা থাকলে কোনাে কাজে সফলতা আসবে না। ভয় ও সংকোচ দূর করে সামনে এগােতে হয়। কিন্তু উদ্দীপকের মুনিম সংকোচ ও ভয়কে উপেক্ষা করতে পারেনি। আর পাছে লােকে কিছু বলে’ কবিতার এই দ্বিধা ও সংকোচের দিকটিই উদ্দীপকের মুনিমের মাঝে ফুটে উঠেছে।

ঘ. “উদ্দীপকের সােহেলই পাছে লােকে কিছু বলে’ কবিতার কবির প্রত্যাশিত ব্যক্তি”- মন্তব্যটি সঠিক। পাছে লােকে কিছু বলে’ কবিতায় বলা হয়েছে সংশয়াপন্ন ও দুর্বল মানসিকতার মানুষের কথা। এসব মানুষ সব সময় নিন্দা ও সমালােচনার ভয়ে তটস্থ থাকে। কিন্তু সমাজে অবদান রাখতে গেলে মনে দ্বিধা রাখা যাবে না। লােকলজ্জা, ভয়ভীতি উপেক্ষা করে মানুষের কল্যাণের পথে চলার কথা আলােচ্য কবিতার কবি বলেছেন। উদ্দীপকের শিক্ষকের পাঠদানের সময় লজ্জা ও সংকোচে মুনিমের প্রশ্ন করার কথা বলা হয়েছে। আবার ওই ক্লাসেরই সােহেল তার প্রয়ােজনীয় প্রশ্নগুলাে শিক্ষককে করে বিষয়টি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা লাভ করে। কোনাে বিষয় ভালােভাবে বুঝতে হলে সংকোচ না করে তা জানার আগ্রহ থাকতে হয়। পাছে লােকে কিছু বলে’ কবিতায় কবি মানুষের মাঝে বিদ্যমান দ্বিধা ও সংকোচের কথা উল্লেখ করার পাশাপাশি এগুলাে থেকে উত্তরণের কথা বলেছেন। দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে কখনাে কোনাে কাজে সফলতা পাওয়া যায় না। তাই কবি মনে করেন, সমাজে অবদান রাখতে হলে দ্বিধাগ্রস্ত হওয়া যাবে না। দৃঢ় মনােবল নিয়ে লােকলজ্জা ও সমালােচনাকে উপেক্ষা করতে হবে। উদ্দীপকেও দেখানাে হয়েছে সােহেল তার মনের দ্বিধা দূর করে শিক্ষকের কাছ থেকে প্রয়ােজনীয় বিষয়টি জেনে নিয়েছে। সংকোচ উপেক্ষা করে প্রয়ােজনীয় বিষয়গুলাে না জানলে সে সমাজের কল্যাণে অবদান রাখতে পারবে না। তাই বলা যায়, প্রশ্নোত্ত মন্তব্যটি সঠিক।

৪. সৃজনশীল প্রশ্ন: মিলনের অমায়িক ব্যবহারে সকল মানুষ মুগ্ধ। সে ধনী-গরিব, ছােটো-বড়াে সবার সাথে সুন্দর ব্যবহার করে। শ্রমজীবীদের সঙ্গে সুন্দর ব্যবহার করতে দেখে তার বন্ধু শিপন বলে ‘হােটো লােকদের এত আস্কারা দিতে নেই। কিন্তু মিলন শিপনকে বলে, ‘সকল মানুষের সাথে সুন্দর ব্যবহার করলে সম্মান কমে না, বরং বাড়ে।

ক. হৃদয়ে বুদবুদের মতাে কী ওঠে?
খ. একটি স্নেহের কথা প্রশমিতে পারে ব্যথা’- ব্যাখ্যা করাে।
গ. শিপনের মধ্যে ‘পাছে লােকে কিছু বলে’ কবিতার কোন দিকটি প্রকাশ পেমেহে? ব্যাখ্যা করাে।
ঘ. উদ্দীপকের মিলনের মানসিকতা ও ‘পাছে লােকে কিছু বলে কবিতার কবির মানসিকতা একসূত্রে গাঁথা”- মূল্যায়ন করাে।

৪. সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

ক. হৃদয়ে বুদবুদের মতাে শুভ্র চিন্তা ওঠে।

খ. মানুষের জীবনে দুঃখ-যন্ত্রণা নেমে আসলে একটু স্নেহপূর্ণ কথাই মনের ব্যথাকে প্রশমিত করতে পারে। মানবজীবন পুষ্পসজ্জা নয়। জীবনে নানা ঘাত-প্রতিঘাত আসবে, আসবে দুঃখ-যন্ত্রণা। নিজের অসহায় মুহূর্তে মানুষ শুনতে চায় কারাে স্নেহপূর্ণ কথা। সে পেতে চায় মমতা, যা তাকে মানসিকভাবে একটুখানি শান্তি দিতে পারে। আলােচ্য অংশে এ বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছে।

গ. উদ্দীপকের শিপনের মধ্যে পাছে লােকে কিছু বলে’ কবিতার দ্বিধা ও সংকোচবােধের দিকটি উঠে এসেছে। পাছে লােকে কিছু বলে’ কবিতায় সমাজের একশ্রেণির মানুষের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে, যারা কোনাে কাজ করতে গেলে মানুষের সমালােচনার ভয়ে দ্বিধাগ্রস্ত হয়। এর ফলে কাজ এগােয় না। ফলে তাদের দ্বারা সমাজের কোনাে উন্নতি সাধিত হয় না। উদ্দীপকে দ্বিধাহীন ও দৃঢ় মনােবলসম্পন্ন মিলনের আচরণের কথা প্রতিফলিত হয়েছে। শ্রমজীবী মানুষ থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষের সাথে তার সুন্দর ব্যবহার মুগ্ধ করে সকলকে। কিন্তু মিলনকে তার বন্ধু শিপন ছােটোলােকদের সাথে এমন ব্যবহার করা ঠিক নয় বলে উল্লেখ করে। শিপন মনে করে শ্রমজীবী মানুষদের বেশি আস্কারা দিতে নেই। তার মধ্যে এক ধরনের দ্বিধা ও সংকোচবােধ কাজ করে বলেই সে এমন ধারণা পােষণ করে। আলােচ্য কবিতায় সংশয়গ্রস্ত মানুষের ভীতু স্বভাবের দরুন জীবনে উন্নতি না হওয়ার কথা ব্যক্ত হয়েছে। নিন্দুকের ভয়ে কাজ করতে না পারা দুর্বলচিত্তের অধিকারী মানুষের চিত্র প্রতিফলিত হয়েছে। এক্ষেত্রে উদ্দীপকের শিপনের মধ্যে আলােচ্য কবিতার ভাবগত ঐক্য পরিলক্ষিত হয়।

ঘ. ভয়-ভীতি সমালােচনাকে উপেক্ষা করে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বানের দিক থেকে উদ্দীপকের মিলনের মানসিকতা ‘পাছে লােকে কিছু বলে কবিতার কবির মানসিকতার প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠে এসেছে। আলােচ্য কবিতায় কবি দুর্বলচিত্তের মানুষের কথা ব্যক্ত করেছেন যারা সমালােচনার ভয়ে সামনে এগিয়ে যেতে পারে না। কে কী মনে করবে, কে কী সমালােচনা করবে এই ভেবে তারা শঙ্কিত থাকে। এর ফলে অনেক সুন্দর চিন্তার অপমৃত্যু ঘটে। অর্থাৎ এর মাধ্যমে কবি মূলত এসব ভীতিকে উপেক্ষা করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। উদ্দীপকের মিলনের মানসিকতার মাঝে দৃঢ়চিত্তের পরিচয় পাওয়া যায়। সে সকলের সমালােচনাকে উপেক্ষা করে সর্বস্তরের মানুষের সাথে সুন্দর ব্যবহার করে। এতে সকলে তার ব্যবহারে মুগ্ধ হয়। সে দ্বিধাগ্রস্ত না হয়ে সুন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে সকলের ভালােবাসার পাত্র হয়। সে তার বন্ধুকে বােঝায় শ্রমজীবী মানুষদের সঙ্গে ভালাে ব্যবহার করলে সম্মান কমে না, বরং বাড়ে। আলােচ্য কবিতায় কবির মানসিকতা ও উদ্দীপকের মিলনের মানসিকতা একই ধারায় প্রবাহিত। কবি আহ্বান করেছেন দ্বিধাগ্রস্ত না হয়ে সমালােচনা উপেক্ষা করে এগিয়ে যাওয়ার। তার মতে, দৃঢ় মনােবল নিয়ে লোকলজ্জাকে দূর করতে পারলে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। মানুষের কল্যাণে মহৎ কাজ করতে হলে ভয়-ভীতি-সংকোচ উপেক্ষা করে এগিয়ে যেতে হবে। উদ্দীপকের মিলনও বিশ্বাস করে যে, সুন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষের মর্যাদাহানি হয় না, বরং বাড়ে— যা কবির মানসিকতার অনুরূপ। অতএব বলা যায়, উদ্দীপকের মিলন ও কবি কামিনী রায়ের মানসিকতা একই সূত্রে গাঁথা।

৫. সৃজনশীল প্রশ্ন: স্টিভ জবস নিজে কখনাে কলেজের পাঠ চুকোতে পারেননি। রিড কলেজে ভর্তি হওয়ার মাত্র ছয় মাসের মধ্যে তিনি ড্রপ আউট হয়ে যান। তারপর কোকের বােতল কুড়িয়ে পাঁচ সেন্টের বিনিময়ে খাওয়ার খরচ জোটানাে শুরু করেন। বন্ধুবান্ধব ও তার পরিবারের সদস্যদের আচরণ তাঁকে দারুণভাবে আহত করে। সারাদিন দৌড়াদৌড়ি করে রাতে বন্ধুদের রুমের মেঝেতে মরার মতাে ঘুমানাে স্টিভ জবসই আজ অ্যাপল কোম্পানির মালিক, যেখানে চার হাজারেরও বেশি মানুষ কাজ করছে।

ক. “একটি স্নেহের কথা” -এর পরের চরণটি লেখাে।
খ. ‘শুভ্র চিন্তা’ বলতে কী বােঝানাে হয়েছে?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত স্টিভ জবস-এর বন্ধুবান্ধব ও তার পরিবারের সদস্যদের আচরণ ‘পাছে লােকে কিছু বলে’ কবিতার কোন দিককে ফুটিয়ে তােলে? ব্যাখ্যা করাে।
ঘ. “উদ্দীপকের স্টিভ জবসই কামিনী রায়ের কাঙ্ক্ষিত মানুষ।” —উক্তিটি মূল্যায়ন করাে।

৫. সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

ক. “একটি স্নেহের কথা” -এর পরের চরণ “প্রশমিতে পারে ব্যথা।”

See also  Reaching bangkok-passage-translation-Class-8

খ.‘শুভ্র চিন্তা বলতে মহৎ কাজের জন্য মানুষের মনে উদ্ভূত শুভ চিন্তার বিষয়টিকে বােঝানাে হয়েছে। সমাজে অনেক মানুষ আছে যারা অপরের কল্যাণচিন্তায় সময় ব্যয় করেন। তাদের মনে মহৎ কাজের জন্য অসংখ্য শুভ বুদ্ধির উদ্ভব ঘটে। দ্বিধা ত্যাগ করে এসব শুভ বুদ্ধিকে কাজে লাগাতে পারলে সমাজের মঙ্গল হয়। আর সমাজের কল্যাণে মানুষের মনে, উদ্ভূত এসব মহৎ চিন্তাকে বােঝাতে কবি শুভ্র চিন্তা কথাটি বলেছেন।

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত স্টিভ জবস-এর বন্ধুবান্ধব ও তার পরিবারের সদস্যদের আচরণ ‘পাছে লােকে কিছু বলে’ কবিতার সমালােচকদের স্বরূপ ফুটিয়ে তােলে। পাছে লােকে কিছু বলে’ কবিতায় কবি সমালােচকদের স্বরূপ তুলে ধরেছেন। আমরা কোনাে কাজ করতে পারি না সমালােচকদের ভয়ে। কেননা, যেকোনাে কাজ করতে গেলে আমাদের মনে সংকোচ তৈরি হয়। কে কী মনে করবে এটা ভেবেই মনের যত শুভ্র চিন্তা উবে যায়। উদ্দীপকে স্টিভ জবস-এর বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সদস্যদের আচরণ সমালােচকদের সমতুল্য। তারা স্টিভ জবসের কোকের বােতল কুড়িয়ে খাওয়ার খরচ জোটানাের দিকটি ভালােভাবে নেয়নি। ফলে স্টিভ জবসকে সমালােচনায় বিদ্ধ হতে হয়েছে। নিকট আত্মীয়দের এরূপ আচরণ উদ্দীপকের স্টিভ জবসকে হতাশ করেছে। আর স্টিভ জবসের বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সদস্যদের এরূপ সমালােচনাপ্রবণ মানসিকতার দিকটি পাছে লােকে কিছু বলে’ কবিতার সমালােচকদের দিকটিকেই ফুটিয়ে তুলেছে।

ঘ. ভয়ভীতি ও সংকোচকে উপেক্ষা করে সফল হওয়ার প্রেক্ষিতে উদ্দীপকের স্টিভ জবস আলােচ্য কবিতার কবির কাক্ষিত মানুষ বলেই প্রতীয়মান। পাছে লােকে কিছু বলে’ কবিতায় কবি কামিনী রায় সমালােচক শ্রেণির পরিচয় তুলে ধরার অন্তরালে সংকোচ উপেক্ষা করে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন। দৃঢ় মনােবল নিয়ে লােকলজ্জা ও সমালােচনাকে উপেক্ষা করে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে গেলে সফল হওয়া যায়। আর মনের মধ্যে শঙ্কা ও ভয়ভীতি থাকলে মহৎ কাজেও দ্বিধান্বিত হতে হয়। আলােচ্য কবিতার কবি এই ভয়কে উপেক্ষা ব্রার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন। উদ্দীপকের স্টিভ জবস সমালােচনাকে উপেক্ষা করেছেন। তিনি বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যদের নেতিবাচক মানসিকতায় কষ্ট পেলেও দমে যাননি। নিজের লক্ষ্যের প্রতি অবিচল থেকে কাজ করে গেছেন তিনি। আর সে কারণেই স্টিভ জবস অ্যাপল কোম্পানির মালিক হতে পেরেছেন। তিনি যদি সমালােচকদের কথায় দমে যেতেন তাহলে কখনােই এ অবস্থানে আসতে পারতেন না। পাছে লােকে কিছু বলে’ কবিতার কবি ভয়ভীতি ও সংকোচকে উপেক্ষা করে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা করেছেন। সমাজে অবদান রাখতে গেলে সংকোচকে উপেক্ষা করার বিকল্প নেই। আর উদ্দীপকের স্টিভ জবস সেই কাজটিই সফলভাবে করতে পেরেছেন। ফলে উদ্দীপকের স্টিভ জবস আলােচ্য কবিতার কবি কামিনী রায়ের প্রত্যাশিত মানুষেরই বাস্তব প্রতিফলন। তাই বলা যায়, “উদ্দীপকের স্টিভ জবসই কামিনী রায়ের কাঙ্ক্ষিত মানুষ।” উক্তিটি যথাযথ।

৬. সৃজনজীল প্রশ্ন: গ্রীষ্মের ছুটি হলে শফিক বাড়িতে আসে। কয়েকজন বেকার যুবক ও সহপাঠী বন্ধুকে নিয়ে পরিকল্পনা করে গ্রামে নৈশবিদ্যালয় খোলার। সবাই তার এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানায়। এজন্য প্রয়োজনীয় বইপত্র, ঘর, শিক্ষক সবই নির্বাচন করে। এমন সময় গ্রামের এক লোক বলে, এর আগে কামাল মাস্টারের মতো মানুষ এ কাজে ফেল মেরেছে, সেখানে কচি শিশুরা খুলবে নৈশবিদ্যালয়? একথা শুনে তারা দমে যায়।

ক. ‘সংকল্প’ শব্দটির অর্থ কী? ১
খ. একটি স্নেহের কথায় কীভাবে আমাদের ব্যথা দূর হতে পারে? ২
গ. শফিকের উদ্যোগ ব্যাহত হওয়ার কারণ ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার আলোকে ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. শফিকের মাঝে কী ধরনের পরিবর্তন এলে সে তার পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করতে সক্ষম হতো তা ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার আলোকে যুক্তিসহ লেখ। ৪

৬. সৃজনজীল প্রশ্নের উত্তর

ক. ‘সংকল্প’ শব্দটির অর্থ মনের দৃঢ় ইচ্ছা।

খ. একটি স্নেহের কথায় যে আদর থাকে তার ছোঁয়ায় আমাদের ব্যথা দূর হতে পারে। মানুষের মন সংবেদনশীল। এ মন কটু কথায় কষ্ট পায় আর স্নেহের কথায় সুখ অনুভব করে। ব্যথিত মানুষ স্বভাবতই মানসিকভাবে অন্যের সাহায্য প্রত্যাশা করে। মানুষের মনে যদি কোনো গভীর কষ্ট জমে থাকে, তাহলে যদি কেউ স্নেহের কথা বলে তার মন থেকে সেই কষ্ট অনেক লাঘব হয়ে যায়। অনেক কাজে আমরা সফল হতে পারি না, তখন আস্থা হারিয়ে ব্যথাতুর সময় অতিবাহিত করতে থাকি। এ সময় একটি স্নেহপূর্ণ কথাই হৃদয়ের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে পারে।

গ. শফিকের উদ্যোগ ব্যাহত হওয়ার কারণ হিসেবে নিন্দুকের সমালোচনাকে ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় ইঙ্গিত করা হয়েছে। ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় কবি সর্বদা লোকের কথায় ভিতু হয়ে পড়েন। কোনো কাজ করতে গেলে লোকে কী ভাববে, কী মনে করবে এ চিন্তায় অস্থির হন। লোকের কথায় সংকল্পে সংশয় দেখা দেয়। মহৎ কোনো কাজ কবি সম্পাদন করতে সাহসী হন না। লোকলজ্জার ভয়ে, সমালোচনার ভয়ে সংকুচিত হয়ে পড়েন। উদ্দীপকের শফিকের ক্ষেত্রেও নিন্দুকদের সমালোচনার বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে। শফিক যখন উদ্যোগী হয়ে গ্রামের কয়েকজন বেকার যুবক ও সহপাঠী বন্ধুকে একত্রিত করে পরিকল্পনা করে গ্রামে একটি নৈশবিদ্যালয় খোলার। তখন এক লোক উপস্থিত হয়ে তাদের কাজকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে। তার নেতিবাচক কথায় শফিকের সুন্দর উদ্যোগ ব্যাহত হয়। তাই বলা যায়, ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় ফুটে ওঠা নিন্দুকের সমালোচনার কারণেই শফিকের সুন্দর উদ্যোগ ব্যাহত হয়।

ঘ. সমালোচনা উপেক্ষা করে দৃঢ় মনোবলে এগিয়ে গেলে শফিক পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করতে সক্ষম হতো। কামিনী রায় তাঁর ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় লোকের কথায় মানুষের গুটিয়ে থাকার প্রবণতাকে তুলে ধরেছেন। কোনো কাজ করতে গেলে মানুষ দ্বিধাগ্রস্ত হয়। কে কী মনে করবে, কে কী সমালোচনা করবে এ ভেবে বসে থাকে মানুষ। এর ফলে কোনো কাজ এগোয় না। যারা সমাজে অবদান রাখতে চান তাদের দ্বিধা করলে চলবে না। দৃঢ় মনোবল নিয়ে লোকলজ্জা ও সমালোচনাকে উপেক্ষা করতে হবে। উদ্দীপকে শফিকের উদ্যোগ মহৎ। বেকার যুবক ও বন্ধুদের নিয়ে মানুষকে শিক্ষিত করতে তারা নৈশবিদ্যালয় স্থাপন করতে চায়। প্রয়োজনীয় বইপত্র, ঘর, শিক্ষক সবই নির্বাচন করে কিন্তু এক লোকের কথায় তারা সে উদ্যম হারিয়ে ফেলে। লোকের কথায় তারা দমে যায় মহৎ উদ্যোগ থেকে। কিন্তু ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার কবির চাওয়াকে প্রাধান্য দিয়ে তারা যদি দ্বিধাহীন চিত্তে এগিয়ে যেত তাহলে তাদের উদ্যোগ সফল হতো। উল্লিখিত আলোচনায় বলা যায় যে, উদ্দীপকের শফিক দ্বিধা, ভয়, সংশয় থেকে মুক্ত হতে পারলেই তার পরিকল্পনাটি বাস্তবায়িত হতো।

৭. সৃজনজীল প্রশ্ন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চারুকলায় পাস করা সোহেল চাকরি খুঁজে ব্যর্থ হয়ে নিজ গ্রামে সৌদি আরবের নানা জাতের খেজুরের বাগান শুরু করে। তখন পরিবার ও গ্রামের অনেকেই তার এমন কর্মকাণ্ড নিয়ে নানা রকম ব্যঙ্গাত্মক কথা বলত। কিন্তু সে থেমে থাকে না। অথচ ঐ বাগান থেকে সোহেল আজ লক্ষ লক্ষ টাকার মালিক।

ক. কবি কামিনী রায়ের কবিতায় কার প্রভাব স্পষ্ট? ১
খ. ‘শক্তি মরে ভীতির কবলে’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. উদ্দীপকের সোহেলের কাজে ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার যে দিকটি ফুটে উঠেছে তা বর্ণনা কর। ৩
ঘ.“উদ্দীপকের সোহেলের মতো মানুষদের জন্য ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতাটি প্রেরণার উৎস”- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।

৭. সৃজনজীল প্রশ্নের উত্তর:

ক. কবি কামিনী রায়ের কবিতায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রভাব স্পষ্ট।

খ. ভীতি মনকে দুর্বল করে বলে ভীতির কবলে শক্তি মুখ থুবড়ে পড়ে। আলোচ্য অংশে এ কথাই বলা হয়েছে। মানুষের মনের মধ্যে ভালো কাজ করার শক্তি জাগে, সে সমাজ ও সংসারের জন্য উন্নয়নমূলক কাজ করতে চায়। কিন্তু পরক্ষণেই সেই শক্তি নিঃশেষ হয়ে যায়। এর কারণ নিন্দুকের ভয়। ভালো কাজ করতে গিয়ে পাছে কিনা মানুষের কুৎসার সম্মুখীন হয়, লজ্জার মধ্যে পড়তে হয়। আলোচ্য চরণে নিন্দুকদের ভয় পাওয়ার কথা বলা হয়েছে। তাদের ভয়েই মনের শক্তি নিঃশেষ হয়ে যায়।

গ. উদ্দীপকের সোহেলের কাজে ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার দ্বিধাগ্রস্ত-সংশয় কাটিয়ে ইতিবাচক দিকটি ফুটে উঠেছে। ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার মহৎ কাজের জন্য মানুষের মনে উদ্ভূত শুভ চিন্তার বিষয়টি ফুটে উঠেছে। ভালো কাজে ইচ্ছুক মানুষের মনে বুদবুদের মতো অসংখ্য শুভবুদ্ধির উদয় হয়। দ্বিধা ত্যাগ করে এ শুভ চিন্তাগুলোকে কাজে লাগাতে পারলে জীবন সার্থক হয়। উদ্দীপকে দেখা যায়, সোহেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করার পরে কোনো চাকরি না পেয়ে নিজ গ্রামে সৌদি আরবের বিভিন্ন জাতের খেজুরের বাগান শুরু করে। তখন তার পরিবার ও গ্রামের লোকজন তার কর্মকাণ্ড নিয়ে নানা রকম ব্যঙ্গাত্মক কথা বলে। কিন্তু সোহেল লোকলজ্জা ও সমালোচনা উপেক্ষা করে আপন মনের জোর ও দৃঢ়তার কারণে আজ ঐ বাগান থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার মালিক। অর্থাৎ উদ্দীপকের সোহেলের কাজে ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার সংশয়গ্রস্ত মানসিকতা পরিহার করে দৃঢ়ভাবে নিজ লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার ইতিবাচক দিকটি ফুটে উঠেছে।

See also  সূরা ফীল এর বাংলা উচ্চারণ-অর্থ-Surah Al-Fil

ঘ. ‘উদ্দীপকের সোহেলের মতো মানুষদের জন্য ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতাটি প্রেরণার উৎস’- এ মন্তব্যটি যথার্থ। মানুষের কল্যাণে মহৎ কাজ করতে গেলে অনেক সময় বিধিনিষেধের সম্মুখীন হতে হয়। কিন্তু এসব ভয়ভীতি ও সংকোচ উপেক্ষা না করলে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানো যায় না। ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় নিঃসংকোচিত হয়ে জীবনপথে পরিচালিত হওয়ার কথা বলা হয়েছে। দ্বিধাগ্রস্ত না হয়ে বরং মুক্ত স্বাধীনভাবে এগিয়ে যেতে হবে। কেননা ভালো কাজ করতে গেলে লোকলজ্জা ও সমালোচনাকে উপেক্ষা করে চলতেই হবে। আমরা উদ্দীপকের সোহেলের মধ্যে ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতাটির মর্মবাণী খুঁজে পাই। সোহেল মহৎ কাজের উদ্যোগ নিয়ে সংকোচবোধকে উপেক্ষা করে সামনের দিকে এগিয়ে গেছে। দৃঢ় মনোবলের কারণে সোহেলের সিদ্ধান্ত থেকে কেউ তাকে টলাতে পারেনি। দ্বিধা এবং ভয়ভীতি উপেক্ষা করে সোহেল নিজ শ্রমবলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। উল্লিখিত আলোচনায় বলা যায় যে, উদ্দীপকের সোহেলের মতো মানুষদের জন্য ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতাটি প্রেরণার উৎস।

৮. সৃজনজীল প্রশ্ন : গ্রামের ছেলে মেহেদী গ্রামের বাজারে অনলাইন সেবা প্রদানের জন্য একটি কম্পিউটার দোকান দিয়েছে। দোকানে সেবা পেতে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার দবির এ অবস্থা দেখে বলল, মেহেদীর কী রাজনৈতিক খায়েস আছে? এ কথা শুনে মেহেদী পিছু হটে যায়?

ক. কামিনী রায়কে কোন স্বর্ণপদকে ভ‚ষিত করা হয়? ১
খ. ‘একটি স্নেহের কথা প্রশমিতে পারে ব্যথা’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে? ২
গ. মেহেদীর উদ্যোগ বাধাগ্রস্ত হওয়ার কারণ ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার আলোকে ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ.মেহেদীর মানসিক দৃঢ়তা থাকলেই সে সফল হতো- ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার আলোকে মূল্যায়ন কর। ৪

৮. সৃজনজীল প্রশ্নের উত্তর:

ক. কামিনী রায়কে জগত্তারিণী স্বর্ণপদকে ভ‚ষিত করা হয়।
খ. অনুশীলনীর ২ নং প্রশ্নে ‘খ’ নং উত্তর দ্রষ্টব্য।

গ. ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় বর্ণিত সমালোচকের সমালোচনার কারণে উদ্দীপকের মেহেদীর উদ্যোগ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় সমালোচকের সমালোচনার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। সমালোচকের কাজই সমালোচনা করা। এক্ষেত্রে ভালো আর মন্দ নেই। তারা সর্বদা সমালোচনা করে মানুষকে দমিয়ে দেয়। মানুষের মনের মধ্যে সৃষ্টি করে দ্বিধার পাহাড়। উদ্দীপকের মেহেদীও সমালোচনার কারণে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছে। সে মানুষের মাঝে আধুনিক সভ্যতার সুফল পৌঁছে দিতে কম্পিউটারের দোকান দেয়। তাই সাধারণ মানুষ তার দোকানে ভিড় জমায়। কিন্তু বিষয়টি মেনে নিতে পারে না ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার। সে মেহেদীর ব্যবসাকে রাজনীতির সঙ্গে তুলনা করে তার অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করে। তাই বলা যায়, কবিতায় বর্ণিত সমালোচনার কারণে মেহেদীর উদ্যোগ বাধাগ্রস্ত হয়েছে।

ঘ. মেহেদীর মানসিক দৃঢ়তা থাকলেই সে সফল হতো- ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার আলোকে মন্তব্যটি যথার্থ। ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় সমালোচনার বিষয়টি বিদ্যমান। সমালোচকের কাজই সমালোচনা করা। কিন্তু এতে আমাদের ভীত হওয়া বা মহৎ কাজ থেকে ফিরে আসা উচিত নয়, বরং মানসিকতাকে দৃঢ় করতে হয়। যাতে সকল সমালোচনাকে উপেক্ষা করে আমরা সফল হতে পারি, সে লক্ষ্যে কাজ করতে হয়। তবেই জীবনে সফলতা অর্জন করা সম্ভব। উদ্দীপকের মেহেদী মানুষের মাঝে অনলাইন সেবা পৌঁছে দিতে কম্পিউটারের দোকান দেয়। ফলে মানুষ তার দোকানে ভিড় জমায়। কিন্তু বিষয়টি ভালো চোখে দেখে না ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার। তার কঠোর সমালোচনার কারণে মেহেদী তার মহৎ উদ্যোগ থেকে সরে আসে। যা মোটেও ঠিক নয়। সমালোচনার কারণে কখনই মহৎ উদ্যোগ থেকে ফিরে আসা উচিত নয়। বরং দৃঢ় মানসিকতা ধারণ করতে হয়। তবেই সফল হওয়া সম্ভব আর এই মানসিকতা মেহেদী ধারণ করলে সেও সফল হতো। পাছে লোকে কিছু বলে সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

৯. সৃজনজীল প্রশ্ন: নকুল তার বিদেশি বন্ধুকে নিয়ে রমনা পার্কে বেড়াতে গিয়েছিল। হাঁটতে হাঁটতে তারা গল্প করছে। এমন সময় নকুল দেখল, একটা শালিক পাখির পায়ে জালের মতো কী যেন আটকে আছে, তাই পাখিটা উড়তে পারছে না- এটা দেখে নকুলের মনে দয়া হলো পাখিটির জন্য। কিন্তু সে পাখিটিকে মুক্ত করতে পারল না, কারণ সামান্য পাখিকে মুক্ত করার মতো ক্ষুদ্র কাজ করলে বিদেশি বন্ধুর সামনে যদি সম্মান খোয়া যায়, এই ভয় নকুলের সদিচ্ছাকে সুপ্ত করে দিল। খানিক বাদে এক দুষ্টু ছেলে এসে পাখিটা ধরে নিয়ে গেল।

ক. সংকল্প সর্বদা কীসে টলে?
খ. ‘সদা ভয়, সদা লাজ’ – ব্যাখ্যা কর।
গ. ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার প্রথম স্তবকের সঙ্গে উদ্দীপকের সাদৃশ্য দেখাও।
ঘ.‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতা ও উদ্দীপক একই সত্য নির্দেশ করে-মন্তব্যটি বিচার কর।

৯. সৃজনজীল প্রশ্নের উত্তর:

ক. সংকল্প সর্বদা সংশয়ে টলে।

খ. ‘সদা ভয়, সদা লাজ’-চরণটি দ্বারা মনের জড়তা বোঝানো হয়েছে। সমালোচনার জন্য ভালো কাজ করতেও মানুষ ভয় ও লজ্জা পায়। কারণ যদি কাজ শুরু করে শেষ না করা যায় তাহলে লোকমুখে সমালোচনার ঝড় উঠবে, সমাজে সে মুখ দেখাতে পারবে না। ফলে অন্তরের সংকল্প টলে।

গ. ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার প্রথম স্তবকের সাথে উদ্দীপকের সাদৃশ্য রয়েছে।‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার প্রথম স্তবকে কবি বলেছেন- আমরা কাজ করতে পারি না, কারণ আমাদের মনে সর্বদাই রয়েছে ভয়ের আনাগোনা। লজ্জা আমাদের সর্বদাই তাড়া করে ফেরে। আমাদের মনে যদি কোনো সংকল্প আসে, তবে তার চেয়ে বেশি আসে সংশয়। কাজটা করা উচিত কী উচিত না- এটা ভাবতে ভাবতেই আমাদের সংকল্প স্তিমিত হয়ে পড়ে। উদ্দীপকের নকুলের চরিত্রে দ্বিধা-দ্বন্দ্বের বিষয়টি স্পষ্ট প্রকাশ পেয়েছে। উদ্দীপকে দেখা যায়, নকুলের খুব ইচ্ছা হচ্ছিল পাখিটাকে মুক্ত করে দিতে। কারণ দুষ্টু শিকারির চোখে পড়লে পাখিটার প্রাণনাশের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু বিদেশি বন্ধু সঙ্গে থাকার কারণে নকুল পাখিটাকে মুক্ত করতে পারে না। পাখিটাকে মুক্ত করলে নতুন বন্ধুর কাছে যদি সম্মান নষ্ট হয়, এই ভয়ে নকুল পাখিটাকে বাঁচাতে পারে না। তাই বলা যায়, ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার প্রথম স্তবকের সঙ্গে উদ্দীপকের সাদৃশ্য রয়েছে।

ঘ. ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতা ও উদ্দীপক একই সত্য নির্দেশ করে মন্তব্যটি যথার্থ। ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় কবি আমাদের মনের লজ্জাকে ফুটিয়ে তুলেছেন, আমাদের মনে যদি কোনো সংকল্প সৃষ্টি হয়, তার চেয়ে বেশি সৃষ্টি হয় সংশয়। ফলে মনের মাঝেই সংকল্পের বিলুপ্তি ঘটে। বাস্তবে তার প্রতিফলন ঘটে না। লোকলজ্জার ভয়ে আমরা সর্বদাই কর্তব্যকে আড়ালে রাখি। কখনো কখনো বিশেষ পরিস্থিতিতে আমাদের প্রাণ কাঁদে। কিন্তু লজ্জার কারণে সে কান্না চোখে প্রকাশ পায় না। এভাবে লোকলজ্জার কারণে আমরা মহৎ কাজ করা থেকেও বিরত থাকি। উদ্দীপকের নকুল একদিন বান্ধবীকে নিয়ে রমনা পার্কে বেড়াতে গেল। হঠাৎ দেখল একটা শালিক পাখি উড়তে পারছে না। পাখিটার পা কিছুর সঙ্গে আটকে রয়েছে। পাখিটাকে মুক্ত করার ইচ্ছা নকুলের মনে জাগল, কারণ যদি কোনো শিকারি অথবা দুষ্টু ছেলে পাখিটাকে দেখে- তবে ধরে নিয়ে যাবে। নকুলের এই ভালো সংকল্প বাস্তবে রূপ লাভ করল না। কারণ তার বিবেক লজ্জা দ্বারা আচ্ছন্ন। সে চিন্তা করল, তার সঙ্গে বিদেশি বন্ধু রয়েছে। পাখিটাকে মুক্ত করতে গেলে বন্ধুর কাছে সম্মানহানি হতে পারে। ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় আমাদের মনের অহেতুক সংশয়ের দিকটি প্রকাশ করা হয়েছে, যা উদ্দীপকের নকুলের চরিত্রে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়। উল্লিখিত আলোচনায় বলা যায়, ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ ও উদ্দীপক একই সত্য নির্দেশ করে।

Facebook
Twitter
LinkedIn

Related Posts

পাছে লোকে কিছু বলে

পাছে লোকে কিছু বলে-অষ্টম শ্রেণির কবিতাটি কবি কামিনী রায় লিখেছেন। কবিতাটির গুরুত্বপূর্ণ কিছু বহুনির্বাচনী প্রশ্ন বা এমসিকিউ নিচে দেওয়া হয়েছে।...

Read more

Related Posts

Welcome Back!

Login to your account below

Create New Account!

Fill the forms bellow to register

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

x

Add New Playlist

Are you sure want to unlock this post?
Unlock left : 0
Are you sure want to cancel subscription?