গ্যাস্ট্রিক হওয়ার কারণ-লক্ষণ ও ওষুধের নাম

গ্যাস্ট্রিক হওয়ার কারণ-লক্ষণ ও ওষুধের নাম
  • গ্যাস্ট্রিক কি
  • গ্যাস্ট্রিক হওয়ার কারণ কি?
  • গ্যাস্ট্রিকের লক্ষণগুলো কি কি
  • অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিক কি রোগের লক্ষণ
  • গ্যাস্ট্রিকের ওষুধের নাম
  • গ্যাস্ট্রিক এর ওষুধ বেশি খেলে কি হয়

গ্যাস্ট্রিক কী: গ্যাস্ট্রিক বলতে ডাক্তারি ভাষায় বুঝা যায় ইংরেজিতে ডিসপেপসিয়া বা dyspepsia ulcer। আর এর বাংলা হচ্ছে ‌’বদহজম’।

অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, কি রোগের লক্ষণ: গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সাধারণ হলেও ঘন ঘন এতে ভুগলে মোটেও হেলা করবেন না। কারণ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা পারে বিভিন্ন ধরনের পেটের ক্যান্সারের লক্ষণ। একসময় লিভার, ফুসফুস এবং হাড়ের মধ্যেও ছড়িয়ে যেতে পারে এই ক্যান্সার।

READ ALSO

গ্যাস্ট্রিক হওয়ার কারণ কি: এসিডিটি বা গ্যাস্ট্রিক সমস্যা আজকাল নিত্তনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিয়ম মেনে খাবার না খাওয়া, অতিরিক্ত ঝাল মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া, মানসিক চাপ ও মদ্যপানের কারণে এই রোগ হয়ে থাকে। এছাড়া বাইরের খাবার খাওয়া ও অতিমাত্রায় ফাস্টফুডে আসক্তির কারণে গ্যাস্টিক সমস্যা বাড়ছে।

গ্যাস্ট্রিকের লক্ষণগুলো কি কি: পেটের বামপাশে ব্যথা, বুক জ্বালাপোড়া, খাবারে অরুচি, পেট জ্বালাপোড়া, পেট ফেঁপে থাকা, মাথা ঘুরানো, বমি বমি ভাব, অল্প খাবারের পর পেট ভরে গেছে মনে হওয়া, ডিউডেনাম আলসার হলে পেটের মাঝামাঝি ব্যথা এবং ব্যথা পুরো পেটে ছড়িয়ে পড়া, গ্যাস্ট্রিক আলসারের সবচেয়ে অপরিচিত উপসর্গ হচ্ছে খাবার খাওয়ার চাহিদা বেড়ে যাওয়া। অধিকহারে খাবার পরেও রোগীর ক্ষুধা লাগবে। কারণ আলসারের কারণে অনেক সময় দেখা যায়, পাকস্থলি থেকে ব্রেইনে হাঙ্গার সেন্টারে নার্ভ সিগনাল সঠিকভাবে পরিচালিত হতে পারেনা। তাই রোগী পেট ভরে খেলেও হাঙ্গার সেন্টার সঠিক মেসেজ না পাওয়ার কারণে ক্ষুধার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।

গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ: গ্যাস্ট্রিকের ওষুধগুলো হলো রেনিটিডিন, সেকলো, এক্সিলক-২০, ইসুটিন-২০, ওপি-২০, নিউট্রাক, ওরট্রাক, সার্জেল, মাক্সপ্রো, লোসেকটিল, ফিনিক্স-২০, রাবিপ্রাজল, এন্টারসিড এবং ইসোমিপ্রাজল বিপি ইত্যাদি।

See also  গর্ভাবস্থায় তলপেট ভারী লাগে কেন ও দূর করার উপায়

গ্যাস্ট্রিক এর ওষুধ বেশি খেলে কি হয়: দেশে গ্যাস্ট্রিক এর ওষুধ খাওয়া হয় অনেক বেশি। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে কথায় কথায় গ্যাসের ওষুধ গলধকরণ করে এমন আচার কমই আছে। সাধারণ আলসারের ওষুধ ওমিপ্রাজল বেশিদিন একটানা খাওয়ার ফলে অস্টিওপোরোসিস বা হাড় ক্ষয়ের ঝুঁকি বাড়ে বলে জানা গেছে। ডায়রিয়ার মতো সমস্যা হতে পারে।

সতর্কতা: রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধই খাওয়া উচিত নয়। চিকিৎসক এক মাস বা দুই মাসের জন্য লিখে দিলে তা সারা বছর খাওয়া যাবে না। পেটের সমস্যা যদি দীর্ঘ হয়, তাহলে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে সঠিক রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা নিতে হবে। খাবার ও জীবনযাপনের সঠিক নিয়ম মেনে চলতে হবে।

প্রাকৃতিক উপায়ে গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায়: ওষুধ ছাড়াও প্রাকৃতিক উপায়ে গ্যাস্ট্রিক দূর করতে পারবেন। নিচে সেইগুলো দেয়া হলো-

আদা: পেটের গ্যাস সমস্যা সমাধানের জন্য অনেক ভালো প্রাকৃতিক উপাদান হচ্ছে আদা। আদা দিয়ে ফোটানো পানি বা চায়ে আদা খেতে পারেন। আরও ভালো ফল পেতে এর সঙ্গে লেবুর রস বা মধু মিশিয়ে নিতে পারেন। এটি আপনার গ্যাসের সমস্যা দূর করার পাশাপাশি বদহজমও দূর করতে সাহায্য করবে।

লেবু: গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সমাধান করতে লেবুপানি বা লেবু চা পান করলে অনেক ভালো ফল পাওয়া যায়। এর সঙ্গে সামান্য পরিমাণ লবণ ও জিরা গুঁড়া মিশিয়ে খেতে পারেন।

পানি পান করুন: গ্যাসের সমস্যা সমাধানের অনেক বেশি পরিচিত একটি সমাধান হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা। আর এটি করলে তা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমানোর পাশাপাশি আরও অনেক রোগ থেকে মুক্তি দিতেও সহায়তা করবে এটি। এ জন্য নিয়মিত প্রতিদিন অন্তত ছয় থেকে আট গ্লাস পানি পান করুন।

আপেল সিডার ভিনেগার: গ্যাসের সমস্যা দূর করতে অনেকেই আপেল সিডার ভিনেগার খেয়ে থাকেন। আর এটি কার্যকরীও অনেক। এ জন্য খাওয়ার আগে পানি বা চায়ের সঙ্গে এক টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে পান করুন, তা হলেই পাবেন উপকার। এটি নিয়মিত দিনে তিনবার পান করলে অনেক ভালো ফল মেলে।

See also  গর্ভাবস্থায় ওষুধ: রক্তপাত-গ্যাস্ট্রিক-ব্যথা-এলার্জি-জ্বর

দারুচিনি: গ্যাসের সমস্যা কমাতে অনেক কার্যকর হচ্ছে দারুচিনি। এছাড়া এটি পেটের ব্যথা কমাতেও অনেক ভালো কাজ করে। দারুচিনি পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি কুসুম গরম অবস্থায় খেতে পারেন। অথবা চায়ে বা দুধে দারুচিনির গুঁড়া মিশিয়ে পান করতে পারেন। এতেই পাবেন উপকার।

পুদিনাপাতা: পুদিনাপাতা গ্যাসের সমস্যা সমাধানে অনেক বেশি কার্যকরী। এর পাশাপাশি এটি আপনার বমি ভাবও দূর করতে পারে। কিছু পরিমাণে পুদিনাপাতা মুখে নিয়ে ভালো করে চিবালেই কমে যাবে গ্যাসের সমস্যা।

নিয়মিত ব্যায়াম করা: গ্যাস্ট্রিক দূর করতে চাইলে ব্যায়াম করতে পারেন। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা এড়াতে খাওয়ার পর হাঁটার অভ্যাস করুন। এছাড়া দড়ি লাফ, দৌড় বা হাঁটা গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা কমাতেও অনেক কার্যকরী।

পেঁপে: গ্যাস্ট্রিক দূর করতে চাইলে পেঁপে খেতে পারেন। পেঁপেতে রয়েছে পেপেইন নামক এনজাইম যা হজমশক্তি বাড়ায়। তাই নিয়মিত পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস করলে গ্যাসের সমস্যা কমতে থাকবে।

আনারস: আনারসে রয়েছে ৮৫ শতাংশ পানি এবং ব্রোমেলিন নামক হজমে সাহায্যকারী প্রাকৃতিক এনজাইম যা অত্যন্ত কার্যকরী একটি পাচক রস। এটি পরিপাকতন্ত্র পরিষ্কার রাখে। এছাড়া আনারস ত্বকের জন্যও বেশ উপকারী।

ডাবের পানি পান করুন: ডাবের পানি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা অনেকটাই দূর করতে সাহায্য করে। এতে রয়েছে ফাইবার, যা হজমশক্তি বাড়ায় এবং পাশাপাশি অ্যাসিডিটি কমায়। এছাড়াও বুক জ্বালা পোড়া ও পেটে ব্যথা কমাতে ডাবের পানি অত্যন্ত কার্যকরী।

Related Posts

No Content Available
x

Add New Playlist

Are you sure want to unlock this post?
Unlock left : 0
Are you sure want to cancel subscription?