পাছে লোকে কিছু বলে-কবিতার সারাংশ

পাছে লোকে কিছু বলে

পাছে লোকে কিছু বলে কবিতার সারাংশ: ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার মাধ্যমে কবি বলতে চেয়েছেন যে কোনো কাজ করতে গেলে সংকল্পে স্থির থাকতে হবে। লোক নিন্দা, ভয়, অন্যের সমালোচনাকে প্রাধান্য দিলে সেই কাজ পণ্ড হয়ে যায়। তাই নিজেকে লোকচক্ষুর আড়ালে না রেখে হৃদয়ে কোনো শুভ চিন্তার উদ্রেক হলে তা বাস্তবে রূপ দিতে হবে।

পাঠের উদ্দেশ্য: এ কবিতা পাঠ করে শিক্ষার্থীরা শোষক শ্রেণির নিষ্ঠুর শোষণ ও গরিবদের দুর্দশা সম্পর্কে জানতে পারবে। গরিবদের প্রতি তারা সহানুভূতিশীল হবে।

READ ALSO

পাঠ-পরিচিতি: ‘দুই বিঘা জমি’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘চিত্রা’ কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত। দরিদ্র কৃষক উপেন অভাব-অনটনে বন্ধক দিয়ে তাঁর প্রায় সব জমি হারিয়েছে। বাকি ছিল মাত্র দুই বিঘা জমি। কিন্তু জমিদার তাঁর বাগান বাড়ানোর জন্য সে জমি কিনে নিতে চায়। কিন্তু সাত পুরুষের স্মৃতি বিজড়িত সে জমি উপেন বিক্রি করতে না চাইলে জমিদারের ক্রোধের শিকার হয় সে। মিথ্যে মামলা দিয়ে জমিদার সে জমি দখল করে নেয়। ভিটেছাড়া হয়ে উপেন বাধ্য হয় পথে বেরুতে। সাধু হয়ে সে গ্রাম-গ্রামান্তরে ঘোরে। কিন্তু পৈতৃক ভিটের স্মৃতি সে ভুলতে পারে না। একদিন চির-পরিচিত গ্রামে সে ফিরে আসে। গ্রামের অন্য সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও তার ভিটে আজ নিশ্চিহ্ন। কিন্তু হঠাৎ সে লক্ষ করে তার ছোট বেলার স্মৃতি-বিজড়িত সেই আম গাছটি এখনও আছে। সেই আম গাছের ছায়াতলে বসে ক্লান্ত-শ্রান্ত উপেন পরম শান্তি অনুভব করে। তার মনে পড়ে, ঝড়ের দিনে কত না আম সে কুড়িয়েছে এখানে। হঠাৎ বাতাসের ঝাপটায় দুটি পাকা আম পড়ে তার কোলের কাছে। আম দুটিকে সে জননীর স্নেহের দান মনে করে গ্রহণ করে। কিন্তু তখনই ছুটে আসে মালি। উপেনকে সে আম-চোর বলে গালাগালি করতে থাকে। উপেনকে জমিদারের নিকট হাজির করা হয়। উপেন জমিদারের কাছে আমটি ভিক্ষা হিসেবে চাইলে জমিদার তাকে সাধুবেশী চোর বলে মিথ্যা অপবাদ দেয় । এই কবিতার মাধ্যমে কবি দেখাতে চেয়েছেন, সমাজে এক শ্রেণির লুটেরা বিত্তবান প্রবল প্রতাপ নিয়ে বাস করে। তারা সাধারণ মানুষের সম্পদ লুট করে সম্পদশালী হয়। তারা অর্থ, শক্তি ও দাপটের জোরে অন্যায়কে ন্যায়, ন্যায়কে অন্যায় বলে প্রতিষ্ঠা করে। ‘দুই বিঘা জমি’ কবিতাটিতে কবি এদের স্বরূপ তুলে ধরেছেন।

See also  Announcements on board-1-translation-questions-answer-Class-8

কবি-পরিচিতি : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্বকবি, বিশ্বনন্দিত কবি। কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে তাঁর জন্ম ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দের ৭ই মে, ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫শে বৈশাখ। ছেলেবেলায় বিদ্যালয়ের বাঁধাধরা পড়াশোনায় তাঁর মন বসেনি। পড়াশোনার জন্য তাঁকে ওরিয়েন্টাল সেমিনারি, নর্মাল স্কুল, বেঙ্গল একাডেমি- এসব শিক্ষা- প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা হয়েছিল। কিন্তু পাঠ শেষ করার আগেই তিনি সেসব ছেড়ে দেন। ছোটবেলা থেকেই তাঁর কবি-প্রতিভার উন্মেষ ঘটে। সাহিত্যের সকল শাখায় অসামান্য দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছেন তিনি। কবিতা, সংগীত, ছোটগল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ, ভ্রমণকাহিনি, রম্যরচনা ইত্যাদি সাহিত্যের প্রতিটি ক্ষেত্রেই তাঁর পদচারণা ছিল স্বচ্ছন্দ, উজ্জ্বল। তিনি একাধারে কবি, দার্শনিক, গীতিকার, সুরকার, শিক্ষাবিদ, চিত্রশিল্পী, নাট্য-প্রযোজক ও অভিনেতা। ১৯১৩ খ্রিষ্টাব্দে ইংরেজিতে অনুদিত ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যের জন্য তিনি। এশীয়দের মধ্যে প্রথম সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। আমাদের জাতীয় সংগীত — আমার সোনার বাংলা’ তাঁরই লেখা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দের ৭ই আগস্ট (২২শে শ্রাবণ, ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন ।

আরও পড়ুন-

পাছে লোকে কিছু বলে কবিতার লেখক কে

পাছে লোকে কিছু বলে কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন

পাছে লোকে কিছু বলে-গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনী প্রশ্নোত্তর-এমসিকিউ-Mcq

Related Posts

পাছে লোকে কিছু বলে-গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনী প্রশ্নোত্তর-এমসিকিউ-Mcq

পাছে লোকে কিছু বলে-অষ্টম শ্রেণির কবিতাটি কবি কামিনী রায় লিখেছেন। কবিতাটির গুরুত্বপূর্ণ কিছু বহুনির্বাচনী প্রশ্ন বা এমসিকিউ নিচে দেওয়া হয়েছে।...

Read moreDetails

পাছে লোকে কিছু বলে কবিতার গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

অষ্টম শ্রেণির পাছে লোকে কিছু বলে-কবিতাটি লিখেছেন কামিনী রায়। এই কবিতার গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর নিচে দেয়া হলো- ১. সৃজনশীল প্রশ্ন:...

Read moreDetails
x

Add New Playlist

Are you sure want to unlock this post?
Unlock left : 0
Are you sure want to cancel subscription?