সূরা আল মুজাম্মিল (আরবি ভাষায়: المزّمّل) পবিত্র কুরআন শরীফের ৭৩ তম সূরা; এর আয়াত অর্থাৎ বাক্য সংখ্যা ২০ এবং রূকু তথা অনুচ্ছেদ সংখ্যা ২। সূরা আল মুজাম্মিল মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে।
আরবি: يَا أَيُّهَا الْمُزَّمِّلُ
উচ্চারণ: ইয়া য় আইয়্যুহাল্ মুয্যাম্মিলু।
বাংলা অর্থ: হে বস্ত্রাবৃত!
আরবি: قُمِ اللَّيْلَ إِلَّا قَلِيلًا
উচ্চারণ: কুমিল্লাইলা ইল্লা-ক্বলীলান্
বাংলা অর্থ: রাত্রিতে দন্ডায়মান হোন কিছু অংশ বাদ দিয়ে;
আরবি: نِّصْفَهُ أَوِ انقُصْ مِنْهُ قَلِيلًا
উচ্চারণ: নিছ্ফাহূ য় আওয়িন্কুছ্ মিন্হু ক্বলীলা-।
বাংলা অর্থ: অর্ধরাত্রি অথবা তদপেক্ষা কিছু কম
আরবি: أَوْ زِدْ عَلَيْهِ وَرَتِّلِ الْقُرْآنَ تَرْتِيلًا
উচ্চারণ: আওযিদ্ ‘আলাইহি অরত্তিলিল্ কুরআ-না র্তাতীলা-।
বাংলা অর্থ: অথবা তদপেক্ষা বেশী এবং কোরআন আবৃত্তি করুন সুবিন্যস্ত ভাবে ও স্পষ্টভাবে।
আরবি: إِنَّا سَنُلْقِي عَلَيْكَ قَوْلًا ثَقِيلًا
উচ্চারণ: ইন্না-সানুল্ক্বী ‘আলাইকা ক্বওলান্ ছাক্বীলা-।
বাংলা অর্থ: আমি আপনার প্রতি অবতীর্ণ করেছি গুরুত্বপূর্ণ বাণী।
আরবি: إِنَّ نَاشِئَةَ اللَّيْلِ هِيَ أَشَدُّ وَطْئًا وَأَقْوَمُ قِيلًا
উচ্চারণ: ইন্না না-শিয়াতাল লাইলি হিইয়া আশাদ্দু ওয়াতয়াঁও অআক্বওয়ামু ক্বীলা-।
বাংলা অর্থ: নিশ্চয় এবাদতের জন্যে রাত্রিতে উঠা প্রবৃত্তি দলনে সহায়ক এবং স্পষ্ট উচ্চারণের অনুকূল।
আরবি: إِنَّ لَكَ فِي النَّهَارِ سَبْحًا طَوِيلًا
উচ্চারণ: ইন্না-লাকা ফিন্নাহা-রি সাব্হান্ ত্বোয়াওয়ীলা-।
বাংলা অর্থ: নিশ্চয় দিবাভাগে রয়েছে আপনার দীর্ঘ কর্মব্যস্ততা।
আরবি: وَاذْكُرِ اسْمَ رَبِّكَ وَتَبَتَّلْ إِلَيْهِ تَبْتِيلًا
উচ্চারণ: অয্কুরিস্ মা রব্বিকা অতাবাত্তাল্ ইলাইহি তাব্তীলা-।
বাংলা অর্থ: আপনি আপনার পালনকর্তার নাম স্মরণ করুন এবং একাগ্রচিত্তে তাতে মগ্ন হোন।
আরবি: رَّبُّ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ لَا إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ فَاتَّخِذْهُ وَكِيلًا
উচ্চারণ: রব্বুল্ মাশ্রিক্বি অল্মাগ্রিবি লা য় ইলা-হা ইল্লা-হুওয়া ফাত্তাখিয্হু অক্বীলা-।
বাংলা অর্থ: তিনি পূর্ব ও পশ্চিমের অধিকর্তা। তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। অতএব, তাঁকেই গ্রহণ করুন কর্মবিধায়করূপে।
আরবি: وَاصْبِرْ عَلَىٰ مَا يَقُولُونَ وَاهْجُرْهُمْ هَجْرًا جَمِيلًا
উচ্চারণ: ওয়ার্ছ্বি ‘আলা-মা-ইয়াকুলূনা ওয়াহজুর হুম্ হায্রন্ জ্বামীলা-।
বাংলা অর্থ: কাফেররা যা বলে, তজ্জন্যে আপনি সবর করুন এবং সুন্দরভাবে তাদেরকে পরিহার করে চলুন।
আরবি: وَذَرْنِي وَالْمُكَذِّبِينَ أُولِي النَّعْمَةِ وَمَهِّلْهُمْ قَلِيلًا
উচ্চারণ: অর্যানী অল্মুকায্যিবীনা উলিন্ না’মাতি অমাহ্হিল্হুম্ ক্বলীলা-।
বাংলা অর্থ: বিত্ত-বৈভবের অধিকারী মিথ্যারোপকারীদেরকে আমার হাতে ছেড়ে দিন এবং তাদেরকে কিছু অবকাশ দিন।
আরবি: إِنَّ لَدَيْنَا أَنكَالًا وَجَحِيمًا
উচ্চারণ: ইন্না-লাদাইনা য় আন্কা-লাঁও অজ্বাহীমাঁ- ।
বাংলা অর্থ: নিশ্চয় আমার কাছে আছে শিকল ও অগ্নিকুন্ড।
আরবি: وَطَعَامًا ذَا غُصَّةٍ وَعَذَابًا أَلِيمًا
উচ্চারণ: অত্বোয়া‘আ-মান্ যা-গুছ্ছোয়াতিঁও অ‘আযা-বান্ আলীমা-।
বাংলা অর্থ: গলগ্রহ হয়ে যায় এমন খাদ্য এবং যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
আরবি: يَوْمَ تَرْجُفُ الْأَرْضُ وَالْجِبَالُ وَكَانَتِ الْجِبَالُ كَثِيبًا مَّهِيلًا
উচ্চারণ: ইয়াওমা র্তাজুফুল্ র্আদু অল্জ্বিবা-লু অকা-নাতিল্ জ্বিবা-লু কাছীবাম্ মাহীলা-।
বাংলা অর্থ: যেদিন পৃথিবী পর্বতমালা প্রকম্পিত হবে এবং পর্বতসমূহ হয়ে যাবে বহমান বালুকাস্তুপ।
আরবি: إِنَّا أَرْسَلْنَا إِلَيْكُمْ رَسُولًا شَاهِدًا عَلَيْكُمْ كَمَا أَرْسَلْنَا إِلَىٰ فِرْعَوْنَ رَسُولًا
উচ্চারণ: ইন্না য় র্আসাল্ না য় ইলাইকুম্ রসূলান্ শা-হিদান্ ‘আলাইকুম্ কামা য় র্আসাল্না য় ইলা- র্ফি‘আ‘উনা রসূলা-।
বাংলা অর্থ: আমি তোমাদের কাছে একজন রসূলকে তোমাদের জন্যে সাক্ষী করে প্রেরণ করেছি, যেমন প্রেরণ করেছিলাম ফেরাউনের কাছে একজন রসূল।
আরবি: فَعَصَىٰ فِرْعَوْنُ الرَّسُولَ فَأَخَذْنَاهُ أَخْذًا وَبِيلًا
উচ্চারণ: ফা‘আছোয়া- র্ফি‘আউর্নু রসূলা ফাআখয্না-হু আখ্যাঁও অবীলা-।
বাংলা অর্থ: অতঃপর ফেরাউন সেই রসূলকে অমান্য করল, ফলে আমি তাকে কঠিন শাস্তি দিয়েছি।
আরবি: فَكَيْفَ تَتَّقُونَ إِن كَفَرْتُمْ يَوْمًا يَجْعَلُ الْوِلْدَانَ شِيبًا
উচ্চারণ: ফাকাইফা তাত্তাকুনা ইন্ কাফারতুম্ ইয়াওমাইঁ ইয়াজ্ব ‘আলুল্ ওয়িল্দা-না শীবা-।
বাংলা অর্থ: অতএব, তোমরা কিরূপে আত্নরক্ষা করবে যদি তোমরা সেদিনকে অস্বীকার কর, যেদিন বালককে করে দিব বৃদ্ধ?
আরবি: السَّمَاءُ مُنفَطِرٌ بِهِ ۚ كَانَ وَعْدُهُ مَفْعُولًا
উচ্চারণ: নিস্ সামা-য়ু মুন্ফাত্বিরুম্ বিহ্; কা-না ওয়া’দুহূ মাফ্‘ঊলা-।
বাংলা অর্থ: সেদিন আকাশ বিদীর্ণ হবে। তার প্রতিশ্রুতি অবশ্যই বাস্তবায়িত হবে।
আরবি: إِنَّ هَـٰذِهِ تَذْكِرَةٌ ۖ فَمَن شَاءَ اتَّخَذَ إِلَىٰ رَبِّهِ سَبِيلًا
উচ্চারণ: ইন্না হা-যিহী তায্ কিরতুন্ ফামান্ শা-য়া ত্তাখাযা ইলা-রব্বিহী সাবীলা-।
বাংলা অর্থ: বাংলা অর্থ: এটা উপদেশ। অতএব, যার ইচ্ছা, সে তার পালনকর্তার দিকে পথ অবলম্বন করুক।
আরবি:
إِنَّ رَبَّكَ يَعْلَمُ أَنَّكَ تَقُومُ أَدْنَىٰ مِن ثُلُثَيِ اللَّيْلِ وَنِصْفَهُ وَثُلُثَهُ وَطَائِفَةٌ مِّنَ الَّذِينَ مَعَكَ ۚ وَاللَّهُ يُقَدِّرُ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ ۚ عَلِمَ أَن لَّن تُحْصُوهُ فَتَابَ عَلَيْكُمْ ۖ فَاقْرَءُوا مَا تَيَسَّرَ مِنَ الْقُرْآنِ ۚ عَلِمَ أَن سَيَكُونُ مِنكُم مَّرْضَىٰ ۙ وَآخَرُونَ يَضْرِبُونَ فِي الْأَرْضِ يَبْتَغُونَ مِن فَضْلِ اللَّهِ ۙ وَآخَرُونَ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ۖ فَاقْرَءُوا مَا تَيَسَّرَ مِنْهُ ۚ وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَأَقْرِضُوا اللَّهَ قَرْضًا حَسَنًا ۚ وَمَا تُقَدِّمُوا لِأَنفُسِكُم مِّنْ خَيْرٍ تَجِدُوهُ عِندَ اللَّهِ هُوَ خَيْرًا وَأَعْظَمَ أَجْرًا ۚ وَاسْتَغْفِرُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
উচ্চারণ: ইন্না রব্বাকা ইয়া’লামু আন্নাকা তাকুমু আদ্না-মিন্ ছুলুছায়িল্লাইলি অনিছ্ফাহূ অ ছুলুছাহূ অত্বোয়া-য়িফাতুম্ মিনাল্লাযীনা মা‘আক্; অল্লা-হু ইয়ুক্বদ্দিরুল্ লাইলা অন্নাহার্-; ‘আলিমা আল্লান্ তুহ্ছূহু ফাতা-বা ‘আলাইকুম্ ফাকরায়ূ মা-তাইয়াস্সারা মিনাল্ কুরআ-ন্; ‘আলিমা আন্ সাইয়াকূনু মিন্কুম্ র্মাদ্বোয়া অআ-খরূনা ইয়াদ্ব্রিবূনা ফিল্ র্আদ্বি ইয়াব্তাগূনা মিন্ ফাদ্ব্লিল্লা-হি অআ-খরূনা ইয়ুক্ব-তিলূনা ফী সাবীলিল্লা-হি ফাক্ব্রায়ূ মা-তাইয়াস্সার মিন্হু অআক্বীমুছ্ ছলা-তা অআ-তুয্ যাকা-তা অআকরিদ্বুল্লা-হা র্কাদ্বোয়ান্ হাসানা-; অমা-তুক্বাদ্দিমূ লিআন্ফুসিকুম্ মিন্ খইরিন্ তাজ্বিদূহু ‘ইন্দাল্লা-হি হুওয়া খইরঁও অআ’জোয়ামা আজর-; অস্তাগ্ফিরুল্লা-হ্; ইন্নাল্লা-হা গফূর্রু রহীম্।
বাংলা অর্থ: আপনার পালনকর্তা জানেন, আপনি এবাদতের জন্যে দন্ডায়মান হন রাত্রির প্রায় দু’তৃতীয়াংশ, অর্ধাংশ ও তৃতীয়াংশ এবং আপনার সঙ্গীদের একটি দলও দন্ডায়মান হয়। আল্লাহ দিবা ও রাত্রি পরিমাপ করেন। তিনি জানেন, তোমরা এর পূর্ণ হিসাব রাখতে পার না। অতএব তিনি তোমাদের প্রতি ক্ষমা পরায়ন হয়েছেন। কাজেই কোরআনের যতটুকু তোমাদের জন্যে সহজ, ততটুকু আবৃত্তি কর। তিনি জানেন তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ অসুস্থ হবে, কেউ কেউ আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধানে দেশে-বিদেশে যাবে এবং কেউ কেউ আল্লাহর পথে জেহাদে লিপ্ত হবে। কাজেই কোরআনের যতটুকু তোমাদের জন্যে সহজ ততটুকু আবৃত্তি কর। তোমরা নামায কায়েম কর, যাকাত দাও এবং আল্লাহকে উত্তম ঋণ দাও। তোমরা নিজেদের জন্যে যা কিছু অগ্রে পাঠাবে, তা আল্লাহর কাছে উত্তম আকারে এবং পুরস্কার হিসেবে বর্ধিতরূপে পাবে। তোমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা কর। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।