সূরা আল যিলযাল পবিত্র কুরআনের ৯৯ তম সূরা। এর আয়াত সংখ্যা ৮ টি এবং এর রূকুর সংখ্যা ১। যিলযাল সূরাটি মদিনায় অবতীর্ণ হয়েছে। জিলজাল শব্দের অর্থ- ভুকম্পন,ভুমিকম্প ইত্যাদি।
আরবি: إِذَا زُلْزِلَتِ الْأَرْضُ زِلْزَالَهَا
উচ্চারণ: ইযা-ঝুলঝিলাতিল আরদুঝিলঝা-লাহা-।
বাংলা অর্থ: যখন পৃথিবী তার কম্পনে প্রকম্পিত হবে,
আরবি: وَأَخْرَجَتِ الْأَرْضُ أَثْقَالَهَا
উচ্চারণ: ওয়া আখরাজাতিল আরদুআছকা-লাহা-।
বাংলা অর্থ: যখন সে তার বোঝা বের করে দেবে।
আরবি: وَقَالَ الْإِنسَانُ مَا لَهَا
উচ্চারণ: ওয়া কা-লাল ইনছা-নুমা-লাহা-।
বাংলা অর্থ: এবং মানুষ বলবে, এর কি হল ?
আরবি: يَوْمَئِذٍ تُحَدِّثُ أَخْبَارَهَا
উচ্চারণ: ইয়াওমাইযিন তুহাদ্দিছু আখবা-রাহা-।
বাংলা অর্থ: সেদিন সে তার বৃত্তান্ত বর্ণনা করবে,
আরবি: بِأَنَّ رَبَّكَ أَوْحَى لَهَا
উচ্চারণ: বিআন্না রাব্বাকা আওহা-লাহা-।
বাংলা অর্থ: কারণ, আপনার পালনকর্তা তাকে আদেশ করবেন।
আরবি: يَوْمَئِذٍ يَصْدُرُ النَّاسُ أَشْتَاتًا لِّيُرَوْا أَعْمَالَهُمْ
উচ্চারণ: ইয়াওমাইযিইঁ ইয়াসদুরুন্না-ছুআশতা-তাল লিউউরাও আ‘মা-লাহুম।
বাংলা অর্থ: সেদিন মানুষ বিভিন্ন দলে প্রকাশ পাবে, যাতে তাদেরকে তাদের কৃতকর্ম দেখানো হয়।
আরবি: فَمَن يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْرًا يَرَهُ
উচ্চারণ: ফামাইঁ ইয়া‘মাল মিছকা-লা যাররাতিন খাইরাইঁ ইয়ারাহ।
বাংলা অর্থ: অতঃপর কেউ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করলে তা দেখতে পাবে
আরবি: وَمَن يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا يَرَهُ
উচ্চারণ: ওয়া মাইঁ ইয়া‘মাল মিছকা-লা যাররাতিন শাররাইঁ ইয়ারাহ।
বাংলা অর্থ: এবং কেউ অণু পরিমাণ অসৎকর্ম করলে তাও দেখতে পাবে।
সূরা আল যিলযাল-এর ফজিলত
সূরা যিলযাল ২ বার পড়লে ১ বার কুরআন শরীফ পড়ার ছওয়াব হয়। সূরাটিতে ক্বিয়ামত প্রাক্কালের চূড়ান্ত ভূকম্পনের ভয় প্রদর্শন করা হয়েছে এবং মানুষকে অণু পরিমান সৎকর্ম হলেও তা করতে উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) বলেন, জনৈক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর কাছে এল। অতঃপর বলল, أَقْرِئْنِى يَا رَسُولَ اللهِ ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে কুরআন শিক্ষা দিন’। রাসূল (সাঃ) বললেন, তুমি ‘আলিফ লাম রা’ বিশিষ্ট সূরা সমূহের তিনটি পাঠ কর। লোকটি বলল, আমার বয়স বেশী হয়ে গেছে, হৃদয় শক্ত হয়ে গেছে, জিহবা মোটা হয়ে গেছে। রাসূল (সাঃ) বললেন, ‘হা-মীম’ বিশিষ্ট সূরা পড়। লোকটি আগের মতই বলল।
রাসূল (সাঃ) বললেন, তাহলে ‘মুসাব্বিহাত’ থেকে তিনটি পড়। লোকটি আগের মতই বলল। অতঃপর বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে একটি ব্যাপক অর্থপূর্ণ সূরা (سُوْرَةٌ جَامِعَةٌ) শিক্ষা দিন। তখন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাকে সূরা যিলযাল পাঠ করে শুনালেন। ক্বিরাআত শেষ হলে লোকটি বলল, وَالَّذِى بَعَثَكَ بِالْحَقِّ لاَ أَزِيدُ عَلَيْهَا أَبَداً ‘যে মহান সত্তা আপনাকে সত্য সহকারে প্রেরণ করেছেন, তাঁর কসম করে বলছি, আমি এর উপরে মোটেই বৃদ্ধি করব না’। অতঃপর লোকটি পিঠ ফিরে চলে যেতে থাকল।
সূরা যিলযাল থেকে আমরা কি শিখবো
প্রতিটি কাজের হিসাব নেয়া হবে। শ্বাস নেয়া থেকে শুরু করে পানি পান করা পর্যন্ত আমরা যা কিছু করেছি , কিছুই ছোট নয়। একটি ভালো কাজ যতই ছোট হোক না কেন আল্লাহর কাছে মূল্যায়ন করা হয় এবং একটি পাপের হিসাব যত ছোটই হোক না কেন।
সূরা আয যিলযালে কি কি বিশ্বাস আলোচনা করা হয়েছে
সূরাটি বর্ণনা করে শুরু হয়েছে যে কীভাবে বিচারের দিন, পৃথিবী একটি ভয়াবহ ভূমিকম্প বন্ধ করে দেবে এবং “তার বোঝা নিক্ষেপ করবে”। পৃথিবী মানুষের কৃতকর্মের সাক্ষ্য দেবে।





