কি খেলে চোখের সমস্যা দূর হয়

কি খেলে চোখের সমস্যা দূর হয়

চোখের সমস্যা দূর করতে কয়েকটি খাবারের গুরুত্ব রয়েছে। চোখের সমস্যা দূর করতে ভিটামিন এ জাতীয় খাবার বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। মিষ্টি পেঁপে, কাঁঠাল, কুমড়া, কালো কচু শাক, হেলেঞ্চা শাক, পুঁই শাক, লাউ শাক, ধনিয়া পাতা, পাট শাক, গাজর, মিষ্টি আলু, ডিম, কলিজা, মলাঢেলা ছোট্ট মাছ জাতীয় খাবারে চোখের জ্যোতি বাড়ে।

এছাড়া চোখকে ধূলিকণা থেকে বাঁচাতে বিশুদ্ধ পানি দিয়ে সব সময় চোখকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। বেশী করে কোরআন শরীফ পাঠ করুন। আল্লাহর রহমতে দৃষ্টিশক্তি কোনো দিন ও কমবে না।

READ ALSO

মোবাইল, কম্পিউটার, টিভির ক্ষতিকর তেজক্রিয় রশ্মি থেকে যতটা সম্ভব চোখকে দূরে রাখুন। সুগার, প্রক্রিয়াজাত ময়দা, ট্রান্সফ্যাট (বনস্পতি) ও ধূমপান পরিহার করা উচিত। চোখে সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

নিচে চোখের সমস্যার বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেয়া হলো-

 

প্রশ্ন : জন্মগত চোখের গ্লুকোমা রোগের কোন চিকিৎসা আছে কি?

উত্তর : হ্যাঁ- জন্মগত গ্লুকোমা রোগের ভালো চিকিৎসা ব্যবস্থা আছে। তবে তা প্রায় সকল ক্ষেত্রেই শল্য চিকিৎসা । অন্যান্য গ্লুকোমা রোগে যেমন চোখের ফোঁটা ওষুধ, লেজার এর সাহায্যে চিকিৎসা করা সম্ভব- জন্মগত গ্লুকোমার ক্ষেত্রে তা প্রায় অকার্যকর।

জন্মগত গ্লকোমা হলে শিশুর চোখ অনেক বড় হয়ে যায় কিছুটা গরুর চোখের মত দেখায়। এজন্যে ঐ ধরনের চোখকে বলা হয়- বুফথ্যালমস (Buphthalmos)। জন্মগত চোখের জন্মগত ত্রুটির কারণে এই জন্মগত গ্লুকোমা হয়ে থাকে। শিশুদের চোখ বড় হবার সাথে সাথে- চোখ দিয়ে পানি পড়ে, চোখের চাপ বেড়ে কর্ণিয়া ঘোলা হয়ে যায় । দ্রুত চিকিৎসা করা না হলে চিরতরে অন্ধ হয়ে যেতে পারে।

প্রাথমিকভাবে চোখের চাপ কমাবার ওষুধ ব্যবহার করে যত দ্রুত সম্ভব একজন গ্লকোমা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে শল্য চিকিৎসা করা হলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে চোখের চাপ কমে যায় এবং শিশুর চোখ আস্তে আস্তে ভালো হয় এবং দেখারও উন্নতি হয়।

See also  জন্মগত চোখের ছানির চিকিৎসা কি ?

প্রশ্ন : অনেকে চোখের সামনে কালো স্পট দেখেন- এর কারণ কি ?

উত্তর : চোখের পিছনে কালো স্পট দেখা বেশ সাধারণ একটা চোখের উপসর্গ। যাদের মাইনাস পাওয়ার এর চশমা লাগে তারাই বেশি স্পট দেখতে পান। চোখের নড়াচড়ার সাথে সাথে এই স্পটগুলিও নড়াচড়া করে। সাধারণত: চোখের ভিট্রিয়াস জেলের মধ্যে তিলের মত বস্তু তৈরী হয় (degenerative change)। সারা জীবনেও এই স্পটগুলি চোখের ক্ষতি করে না বা দৃষ্টিরও পরিবর্তন হয় না। কয়েকটি চোখের রোগ যেমন- রেটিনার ডিটাচমেন্ট, রেটিনার পানি জমে যাওয়া, ম্যাকুলার ডিজেনারেশন, লেন্সের মধ্যভাগে ছানি পড়া ইত্যাদি নানা কারণেও চোখের সামনে কালো স্পট দেখা যায়। যেহেতু মারাত্মক চোখের রোগেও চোখের সামনে কালো স্পট দেখা যায়- সেজন্য এসকল উপসর্গ থাকলে অন্তত: একবার চক্ষু পরীক্ষা করিয়ে নেয়া উচিত।

প্রশ্ন : চোখে মাঝে মধ্যে ‘ব্লাক আউট’ হবার কারণ কি?

উত্তর : বাহ্যিক চোখের কোন রোগ ছাড়াই যদি কেউ হঠাৎ করে কয়েক সেকেন্ডের জন্য কিছু দেখতে না পান বা ‘ব্লাক আউট’ হয় তার নাম “অ্যামোরোসিস ফিউগাক্স’ (Amaurosis Fugax)।

অনেকক্ষণ বসে থেকে হঠাৎ উঠে দাড়ালে, পাইলটদের ক্ষেত্রে অনেক উচ্চতায় উঠে গেলে এরকম ব্লাক আউট হতে পারে। এছাড়া মাইগ্রেন, রেনডস ডিজিজ, গর্ভবতী অনেক মায়েদের চোখের রেটিনার রক্তাল্পতা হয়ে এরকম ‘ব্লাক আউট’ হতে পারে।

প্রশ্ন : চোখের মধ্যে কি কৃমি হতে পারে ?
উত্তর : মাঝে মধ্যে চোখে খুব ক্ষুদ্রাকৃতির কৃমি পাওয়া যায়। বিভিন্ন প্রকার প্যারাসাইট সরাসরি চোখে রক্তের মাধ্যমে প্রবেশ করতে পারে। ম্যালেরিয়া হলে অনেক সময়- কর্ণিয়ার বৃক্ষাকৃতির আলসার হয়, রেটিনার ধমনিতে এম্বোলিজম হয়ে ধমনী বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

টক্সোপ্লাজমোসিস, টক্সোক্যারিয়েসিস, টিনিয়া ইত্যাদি প্যারাসাইট চোখের নানা অংশে আক্রান্ত হতে পারে। চোখের কোটরে, কনজাংকটিভা, ভিট্রিয়াস ও রেটিনার ‘সিস্ট’ তৈরী করতে পারে । ম্যাকুলা ও অপটিক নার্ভের মুখে পানি জমে যেতে পারে। করয়েড ও রেটিনায় প্রদাহ হয়ে ক্ষত হতে পারে। সঠিক রোগ নির্ণয় হলে ও ওষুধ ব্যবহার করলে চোখের এই প্যারাসাইট বা কৃমি জাতীয় প্রদাহ হতে নিরাময় হওয়া সম্ভব।

See also  মানুষ মানুষকে কামড়ালে কি হয়

প্রশ্ন : চোখ দেখে কি মস্তিষ্কের টিউমার বোঝা যায় ?

উত্তর : অনেক ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের মধ্যে টিউমার বা রক্তক্ষরণ হলে চোখের পরীক্ষায় তার উপসর্গ ধরা পড়ে। এ জন্যেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে চক্ষু বিশেষজ্ঞগণ প্রথম মস্তিষ্কের টিউমার সন্দেহ করে নিউরোলজিস্ট বা নিউরোসার্জনদের নিকট রেফার করেন। মস্তিষ্কের কোন টিউমার হলে বা রক্তক্ষরণ হলে তা সরাসরি অপটিক নার্ভ থেকে ব্রেন পর্যন্ত চোখে দেখার গতিপথে চাপ পড়তে পারে এবং রোগীর দৃষ্টির কিংবা দৃষ্টির পরিসীমার মধ্যে পরিবর্তন হতে পারে। চোখের স্নায়ুতে চাপ পড়ে চোখ বাঁকা (ট্যারা) হয়ে যেতে পারে। চোখের ভেতরে কিংবা বাইরে রক্তক্ষরণ হতে পারে । ব্রেনের মধ্যে চাপ বেড়ে গেলে- চোখের অপটিক নার্ভের মুখে পানি জমতে পারে- যাকে বলা হয় প্যাপিলোইডিমা। এরকম নানা উপসর্গ দেখে চক্ষু বিশেষজ্ঞগণ ব্রেনের টিউমার বা রক্তক্ষরণ বুঝতে পারেন ।

প্রশ্ন : ‘ডবল ভিশন’ বা দুইটি করে জিনিস দেখার কারণ কি ?

উত্তর : একটা বস্তুকে ২টি করে দেখলে তাকে বলে ডবল ভিশন বা ডিপলোপিয়া । যদি দুই চোখ খোলা থাকা অবস্থায় দুইটি করে দেখা যায় তাকে বাইনোকুলার ডিপলোপিয়া বলা হয়। যদি এক চোখ বন্ধ করে অন্য চোখে ২টি করে দেখা যায়। তাকে বলা হয় ইউনিকুলার ডিপলোপিয়া। চোখের ছানির প্রাথমিক পর্যায়ে অনেকেই চাঁদ, তারা দুইটি করে দেখার কথা বলে থাকেন। ডায়াবেটিস সহ নানা অসুখে চোখের মাংশপেশী বা স্নায়ুর দুর্বলতা, চোখের টিউমার ইত্যাদি নানা কারণে বাইনোকুলার ডিপলোপিয়া হতে পারে। ট্যারা চোখেও ডিপলোপিয়া হতে পারে। কারণ দূরীভূত করে ভিটামিন জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করলে এ ধরনের ডিপলোপিয়া ভালো হতে পারে ।

Facebook
Twitter
LinkedIn

Related Posts

Related Posts

Welcome Back!

Login to your account below

Create New Account!

Fill the forms bellow to register

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

x

Add New Playlist

Are you sure want to unlock this post?
Unlock left : 0
Are you sure want to cancel subscription?