গর্ভাবস্থায় ওষুধ: রক্তপাত-গ্যাস্ট্রিক-ব্যথা-এলার্জি-জ্বর

গর্ভাবস্থায়

গর্ভাবস্থায় মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। এরফলে গর্ভবর্তী নারীদের বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি হয়। যেমন: সর্দি-কাশি, গ্যাস্ট্রিক, ঘুম কম, ব্যথা, রক্তপাত, এলার্জি ইত্যাদি। এসময় সতর্ক থাকতে হবে। ডাক্তারদের পরামর্শ মেনে চলতে হবে।

গর্ভাবস্থায় গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ

গর্ভাবস্থায় সকল ওষুধকে এ,বি,সি, ডি এবং এক্স ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। যেমন:

READ ALSO

  • এ-ক্যাটাগরির ওষুধ পুরোপুরি নিরাপদ।
  • বি-ক্যাটাগরি শর্ত সাপেক্ষে নিরাপদ।
  • সি-ক্যাটাগরির ক্ষতিকারক প্রভাব থাকতে পারে।
  • ডি-ক্যাটাগরির ক্ষতিকারক প্রভাব প্রমাণিত।
  • এক্স-ক্যাটাগরি কোন অবস্থাতেই সেবন করা যাবে না।

এই জন্যই চিকিৎসকরা এ এবাং বি ক্যাটাগরির ওষুধ সাধারণত লিখে থাকেন বা খেতে বলেন! রিস্ক বেনেফিট হিসাব করে সি ক্যাটাগরির ওষুধও লিখে থাকেন প্রয়োজনে! কিন্তু ডি এবং এক্স ক্যাটাগরির ওষুধ কখনোই লেখা বা খাওয়া বাঞ্ছনীয় নয়।বি-ক্যাটাগরির মধ্যে আছে শুধুই H2 blocker বা Ranitidine, Famotidine এগুলো যেমন,( RANITID/ NEOCEPTIN-R 150/300)। সি-ক্যাটাগরির মধ্যে রয়েছে-Simethicone, Domperidone, Antacid সহ সকল তরল ওষুধ (Antacid plus, Maganta plus/ Marlox plus )। তরল ওষুধ গুলোর মধ্যে রয়েছে-Potassium bicarbonate ( Asynta, algicid) এটা নিয়ে এখনো কোন রিসার্চ হয়নি তাই এটা NC বা Not classified হিসাবে আছে।মূল কথা হল, গর্ভাবস্থায় এসিডিটির জন্য Ranitidine (রেনিটিড/ নিওসেপটিন-আর) সবচেয়ে ভালো। এতে কাজ না হলে Omepeazole ( লোসেকটিল, কোসেক ইত্যাদি) এগুলোই ভালো। আর যদি ভিন্ন কোনো প্রয়োজন পড়ে বা রোগী পূর্ব হতেই অন্য ওষুধে অভ্যস্ত বা রেনিটিডিন / ওমিপ্রাজলে কাজ না হয় সেক্ষেত্রে Esomeprazole ( Maxpro, Sergel) ব্যবহার করা যেতে পারে। Pantoprazole ব্যবহারে আরেকটু বেশিই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। Rabeprazole (Finix), Lansoprazole ( Lansec) ব্যবহার করা অনুচিত।

গর্ভাবস্থায় রক্তপাত

গর্ভাবস্থায় রক্তক্ষরণ বা যোনীপথে স্পর্টিং হওয়া স্বাভাবিক বিশেষ করে গর্ভাবস্থার শুরুর দিকে। প্রতি ৪ জন মায়ের ১ জনের প্রথম ট্রাইমেস্টারের শুরুর দিকে হালকা রক্তপাত হয়। এটি কোন সমস্যার কারণ নাও হতে পারেই। কিন্তু যেহেতু রক্তপাত হওয়া অন্য আরও জটিলতার লক্ষন হতে পারে তাই এটি দেখা গেলেই দেরী না করে ডাক্তারকে জানানো উচিত যাতে তিনি পরীক্ষা করে দেখতে পারেন যে সবকিছু ঠিক আছে কিনা। গর্ভাবস্থায় রক্তক্ষরণ কোন গুরুতর সমস্যার কারণ নাও হতে পারে আবার তা কোন মারাত্মক জটিলতারও লক্ষন হতে পারে, যেমন- এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি, গর্ভপাত বা প্লাসেন্টা জনিত কোন সমস্যা ইত্যাদি। চিকিৎসকের রক্তপাতের কারণ জানার জন্য বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা করতে পারেন গর্ভের শিশুর সবকিছু ঠিকঠাক আছে।

See also  গর্ভাবস্থায় লিচু খাওয়া যাবে কি

গর্ভাবস্থায় ব্যথার ওষুধ

গর্ভবতীদের জন্য ব্যাথানাশক হিসেবে প্যারাসিটামলকে সাধারণত নিরাপদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ব্যাথানাশক ছাড়াও জ্বরের ঔষধ হিসেবেও প্যারাসিটামল গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু যারা বাছবিচার ছাড়াই একটানা এই ঔষধ সেবন করেন তাদের ক্ষেত্রেই এই সমস্যা তৈরি হতে পারে। বিজ্ঞানীরা বলছেন গর্ভবতীদের ক্ষেত্রে কম মাত্রার এবং কম সময়ের জন্য প্যারাসিটামল সেবন করা যুক্তিযুক্ত।

গর্ভাবস্থায় এলার্জির ওষুধ

এলার্জি একটি সাধারণ শারীরিক সমস্যা, যা অনেকের মধ্যেই দেখা যায়। তাই এটা আশ্চর্যজনক কিছুই নয় যে গর্ভবতী মায়েরাও এতে ভুগবেন। তবে এলার্জি নিয়ন্ত্রণে যেসকল ওষুধ খেতে হয় তা নিয়ে গর্ভবতী মায়েরা অনেক সময়ই দ্বিধায় ভোগেন যে তাদের খাওয়া উচিৎ কিনা। আপনার এলার্জি হতে পারে যদি আপনার শরীরের মিউকাস মেমব্রেন সংকুচিত হয়ে যায়। এটা তেমন কোনো বড় সমস্যা না এবং আপনি ও আপনার শিশু, উভয়ের জন্যই এটা নিরাপদ। তবে ওষুধ গ্রহণের সময় অবশই সতর্ক হতে হবে। আগের অনেক ওষুধে গর্ভকালীন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার আলামত পাওয়া গেছে। তাই ঐসকল ওষুধ খাওয়ার সময় চিকিৎসকের পূর্ণ তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে। অবশ্য আধুনিক অনেক ওষুধ বের হয়েছে যেসবে তেমন কোনো ক্ষতিকর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার লক্ষণ দেখা যায়নি। যাইহোক, গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে সব ধরণের ওষুধ গ্রহণকেই নিরুৎসাহিত করা হয়।

গর্ভাবস্থায় সর্দি-কাশির ওষুধ

গর্ভাবস্থায় নারীরা সবচেয়ে বেশি জ্বর-সর্দি-কাশি ভুগে থাকেন। জ্বর হলো দেহের তাপমাত্রায় স্পাইক, যার ফলে মারাত্মক দুর্বলতা, সর্দিভাব হতে পারে এবং নাক দিয়ে পানি বা সর্দি হতে পারে। একটি জ্বর ইতিমধ্যে অত্যাধিক পরিশ্রম করা ইমিউন সিস্টেমকে আরও দমন করতে পারে। আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নেই, তবে জ্বর সম্ভবত আপনার গর্ভাবস্থার সাথে সম্পর্কিত নয় এবং জ্বর গর্ভাবস্থার প্রতি নিজে কোনও ঝুঁকি বহন করে না। প্যারাসিটামল ট্যাবলেটগুলি জ্বরের জন্য নির্ধারিত ওষুধগুলির মধ্যে সর্বাধিক সাধারণ ফর্ম এবং প্রায় কোনও ফার্মাসিতে কেনা যায়। গর্ভাবস্থায় জ্বরের ওষুধ থেকে আপনার এবং আপনার বাচ্চার উভয়ের জন্যই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে। যে কোনও ওষুধ খাওয়ার আগে আপনার চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা সর্বদা সেরা পছন্দ।

See also  কিডনি রোগের লক্ষণ ও রোগ নির্ণয়-Sign Symptoms Diagnosis of Kidney Disease
Facebook
Twitter
LinkedIn

Related Posts

গর্ভাবস্থায় কোন পাশে ঘুমাবেন ও বাচ্চা কোন পাশে থাকে-sleep-on-during-pregnancy

গর্ভাবস্থায় কোন পাশে ঘুমাবেন ডানে না বামে: প্রথম ত্রৈমাসিকের পরে গর্ভবতী নারীদের সাবধানে সঠিক ঘুমের অবস্থান নির্বাচন করা উচিৎ। গর্ভাবস্থায়...

Read more
গর্ভাবস্থায় তলপেট ভারী লাগে কেন ও দূর করার উপায়

তলপেট ফোলার কারণ: গর্ভাবস্থায় শুরুতেই দেহের প্রজেস্টেরন হরমোনের ক্ষরণ বৃদ্ধি পায়। তার হাত ধরে পাকস্থলী থেকে খাবার নীচে নামার প্রক্রিয়া...

Read more

Related Posts

Welcome Back!

Login to your account below

Create New Account!

Fill the forms bellow to register

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

x

Add New Playlist

Are you sure want to unlock this post?
Unlock left : 0
Are you sure want to cancel subscription?